নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই তালা উপজেলাধীন সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের পাটকেলঘাটা ও এর আশে পাশের এলাকায় কমপক্ষে ৪/৫টি স্থানে প্রায় ৭০০ মিটার সড়ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সদ্য নির্মাণ কাজ শেষ হওয়া এই মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে মাঝ বরাবর ডেবে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। নির্মাণ কাজে অনিয়মের কারণে মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে সড়ক ড্যামেজ হয়ে চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
খোঁজ নিয়ে যানা যায়, সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের সাতক্ষীরা অংশের ২০ কিলোমিটারের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় একশ’ কোটি টাকাGসাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) তত্ত্বাবধায়নে এই সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয় ২০১৮ সালের ১২ মার্চ থেকে। ২০২০ সালের ২০ মে এই সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা। নির্ধারিত সময়ের কিছু পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাগেরহাটের মেসার্স মোজহার এন্টারপ্রাইজ এই সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ করেন। কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে তালা উপজেলাধীন পাটকেলঘাটা বলফিল্ড এলাকায় প্রায় ৩০০ মিটার এলাকা জুড়ে সড়ক ডেবে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
পাটকেলঘাটা থেকে মির্জাপুর বাজার পর্যন্ত আরো ৪/৫ টি স্থানে সড়কে একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।এসব পয়েন্টের কোথাও কোথাও ১ থেকে দেড় ফুট রাস্তা ডেবে গিয়ে পরিবহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় কাজ শেষ হওয়ার অল্প দিনের মধ্যে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি এই সড়কের দুরাবস্থার দুটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হলে তড়িঘড়ি ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কারের কাজ করছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের তথ্য মতে, ২০১৮ সালের ১২ মার্চ থেকে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের নির্মাণ কাজ শুরু করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোজহার এন্টারপ্রাইজ। ২০২০ সালের ২০ মে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা। কাজ শেষ না হওয়ায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন। সড়কের নির্মাণ কাজ এখনো চলমান আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সওজ এর একজন প্রকৌশলী জানান, নকশা অনুযায়ী সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের লোড ধারণ ক্ষমতা মাত্র ২৪ টন। কিন্তু এই সড়কের উপর দিয়ে মালামালসহ ট্রাক চলাচল করে ৭০ থেকে ৭৫ টনের। ২০ টন ওজনের একটি ট্রাক ভোমরা বন্দর থেকে ৫০ টন পাথর নিয়ে এই সড়ক দিয়ে তার গন্তব্যে চলাচল করে। কিন্তু নকশা অনুযায়ী ৭০ থেকে ৭৫ টনের ধারন ক্ষমতা এই সড়কের নেই। যে কারনে এই সড়কে ড্যামেজ দেখা দিচ্ছে। তবে বিষয়টি সওজ এর প্রধান কার্যালয়ের ডিজাইন সেকশনে লিখে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সওজ সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলি মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের ৪/৫টি স্থানে প্রায় ৭০০ মিটার সড়ক ড্যামেজের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি। সড়ক নির্মাণ কাজ এখনো চলমান রয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করার জন্য আগামী ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন। এছাড়া তিন বছরের মধ্যে সড়কের কোথাও ক্ষতিগ্রস্ত হলে ঠিকাদার সম্পূর্ণ নিজ খরচে তা সংস্কার করবেন।’
অতিরিক্ত লোড এবং ওয়াটার লেভেল যদি নতুন নির্মাণ করা সড়কে কাছাকাছি চলে আসে তাহলে অনেক সময় ড্যামেজ হতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত পয়েন্টে কাজ চলছে। অল্পদিনের মধ্যে তা শেষ হয়ে যাবে।’
খুলনা গেজেট/এনএম