রাজধানীর কাকরাইলের মারকাজ মসজিদে প্রবেশ করে সেখানে অবস্থান নিয়েছেন তাবলীগ জামাতের মাওলানা সাদপন্থীরা। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৮টার পর সাদপন্থীদের একটি বিশাল দল মসজিদে প্রবেশ করেন।
এর আগে ভোর থেকে কাকরাইল মসজিদ এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। মোতায়েন করা হয় বাড়তি পুলিশ। গত ৪ নভেম্বর সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমা দুই দফায় আয়োজিত হবে। প্রথম দফার ইজতেমা শুরু হবে আগামী ৩১ জানুয়ারি এবং দ্বিতীয় দফায় শুরু হবে ৭ ফেব্রুয়ারি।
তবে ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক সমাবেশে মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা বলেন, দেশে ইজতেমা একবারই হবে, দু’বার নয়। টঙ্গীতে ইজতেমার মাঠ ও ঢাকার কাকরাইল মসজিদে দিল্লির মাওলানা সাদের অনুসারীদের আর ঢুকতে দেয়া হবে না।
এছাড়া বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে মাওলানা সাদ বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করলে বা সরকার আসতে সহযোগিতা করলে ঢাকা অচল করার হুঁশিয়ারি দেন তাবলীগ জামায়াতের জুবায়েরপন্থীরা। ১২ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন তারা। দাওয়াত ও তাবলীগের হেফাজতের লক্ষ্যে ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
মাওলানা ফজলুর করিম কাসেমী বলেন, ১৫ নভেম্বর মাওলানা সাদের ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। তাবলীগ জামায়াতের মারকাজ কাকরাইল মসজিদে এখন থেকেই তাকে প্রতিহতের প্রস্তুতি নিয়েছে। মাওলানা সাদ তার সব অপব্যাখ্যা থেকে সরে এসে তওবা করলে তার সঙ্গে এক হতে কোনো আপত্তি থাকবে না তাবলীগ জামায়াতের।
প্রসঙ্গত, তাবলীগের জামাতের দুই পক্ষের বিরোধের পর থেকে মারকাজ মসজিদের নিয়ম ছিল ১৪ দিন থাকবেন সাদপন্থীরা আর ২৮ দিন থাকবেন জুবায়েরপন্থীরা। জানা যায়, দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব প্রথম প্রকাশ্য রূপ নেয় ২০১৭ সালের নভেম্বর। সেদিন কাকরাইলে দু’দল কর্মীর মধ্যে হাতাহাতি হয়। চরম বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় গত ৭ বছর ধরে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে কাকরাইল মসজিদের এক অংশে জুবায়েরপন্থীরা ৪ সপ্তাহ ও সাদপন্থীরা দুই সপ্তাহ করে পর্যায়ক্রমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। তবে মসজিদের অপর অংশ জুবায়েরপন্থীরা ১২ মাসই নিজেদের দখলে রাখেন। সাদপন্থীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে হেফাজত সমর্থিত জুবায়েরপন্থীরা বেশি সুবিধা ভোগ করে আসছেন। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠ নিয়েও দুই পক্ষের বিরোধ দিনে দিনে তীব্র হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এনএম