সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বিগত ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলার অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনের মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী ৩ মাসের মধ্যে এই মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোট বিভাগ।
সাতক্ষীরা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর পিপি এড. আব্দুল লতিফ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বুধবার (১ জুন) হাইকোর্টের আদেশ পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার (২ জুন) উভয়পক্ষকে মামলার বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত করা হয়েছে।
বিস্ফোরক ও অস্ত্র আইনের ধারার আলোচিত এই মামলাটি সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল আদালত-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মন্ডল আগামী ১৬ জুন স্বাক্ষীর জন্য দিন ধার্য করেছেন। মামলার ধার্যদিনে রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে স্বাক্ষী উপস্থাপন করবেন বলে নিশ্চিত করেন পিপি।
উল্লেখ্য, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় এসটিসি ২০৭/১৫ ও ২০৮/১৫ (অস্ত্র ও বোমা) মামলা দু’টি ২০১৭ সালে বিচারিক আদালতে চলমান অবস্থায় হাইকোর্টে স্থগীত করেন আসামি পক্ষ। এরপর আসামি পক্ষ এবং রাষ্ট্রপক্ষ পূর্ণ শুনানী শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মোঃ কামরুল হোসাইন মোল্যার বেঞ্চ শুনানী শেষে ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর উক্ত আদেশ ভ্যাকেট করেন। একই সাথে তিন মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতে নথি প্রেরণপূর্বক যথা সময়ে বিচার কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু করোনাকালিন সময়ে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় রায় প্রস্তুুতিতে দেরি হওয়া আদেশ আসতে অনেক সময়ক্ষেপণ হয়।
এখানে উল্লেখ্য যে, এই মামলার আরেকটি পার্ট হামলা ও ভাংচুর মামলায় গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি ঘোষিত রায়ে ৫০ জন আসামির সকলকেই বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেন সাতক্ষীরা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এতে ১নং আসামি বিএনপি নেতা সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবের ১০বছরসহ সকল আসামির বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। আসামিরা সকলেই এখন কারাগারে আছেন এবং কয়েকজন মারা গেছেন।
প্রসঙ্গত: বিগত ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী এবং বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন কলারোয়ার একজন মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে। সেখান থেকে যশোরে ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে পৌছালে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের সময় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে বিএনপির দলীয় নেতাকর্মী এবং সন্ত্রাসীরা হামলা ভাংচুর মারপিট বোমা বিস্ফোরণ ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি ছোড়েন। এতে শেখ হাসিনার সফরসঙ্গীসহ দলীয় কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। এঘটনার এক যুগ পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলা হয়।