খুলনা, বাংলাদেশ | ২০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী : রায় কবে জানা যাবে আজ

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু, খুলনায় প্রস্তুতি কতটুকু?

বশির হোসেন

স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বর্তমানে খুলনায় করোনা সংক্রমণের হার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় খুলনা কতটুকু প্রস্তুত ? করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সকলকে সচেতনকরে প্রতিরোধের দিকে নজর দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত ১৯ এপ্রিল একজন চিকিৎসকের ভর্তির মধ্যদিয়ে যাত্রা শুরু হয় খুলনার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের। একশ’ শয্যার এ হাসপাতালটিতে বর্তমানে ১০টি আইসিইউ বেডের পাশাপাশি ৯০টি সাধারণ বেড রয়েছে। ৫টি কনসেন্ট্রেটর মেশিন, ১০টি হাইফ্লো নেজাল ক্যানোলা মেশিন এবং ১০ ভেন্টিলেটর মেশিন রয়েছে, করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে। এসব কিছু খাতা কলমে থাকলেও সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, কনসেন্ট্রেটর মেশিনগুলো ঠিকমত কাজ করে না। ইলেক্ট্রিক লাইনে সচল থাকলেও রোগীরা তা দিয়ে অক্সিজেনের বিকল্প হিসাবে শ্বাস নিতে পারে না। ১০টি আইসিইউ বেডের কথা বলা হলেও আইসিইউ কক্ষে বেড আছে ৮টি, দুটি বেড বাইরে থাকলেও তা আইসিইউ সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত না। তবে করোনা হাসপাতালে সব থেকে বড় সমস্যা অক্সিজেন নিয়ে। হাসপাতালে রাতে অক্সিজেনের অভাবে মানুষ মরে গেলেও কেউ এগিয়ে আসেন না। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালে ব্যবহৃত অক্সিজেন ফ্লো মিটারের অধিকাংশই নষ্ট। ফলে অর্ধেক অক্সিজেনও ব্যবহার করা যায় না, হয় নষ্ট। এতে একটি সিলিন্ডারের পূর্ণ অক্সিজেন সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা।

এদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে প্রথম যাত্রা শুরু হয় ২৩ এপ্রিল। বর্তমানে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ইউলো জোন ও রেড জোনে ভাগ করে ২০টি বেডের সেবা দেয়া হলেও এই ওয়ার্ডটিতে এ পর্যন্ত ২২০ জন রোগীর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পরে করোনা পরীক্ষায় পজেটিভ আসে ৭২ জনের শরীরে। এই ওয়ার্ডে বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া করোনা রোগীদের নিকট থেকে বা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণকারীর শরীর থেকে সময় মত নমুনা সংগ্রহ নিয়ে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।

খুলনা সিভিল সার্জন অফিস করোনা শুরুর সময় থেকে সদর হাসপাতালকে করোনা মোকাবেলায় ডেডিকেটেড ঘোষণা করলেও কার্যত এর কোন কাজই শেষ করতে পারেননি তিনি। অক্সিজেন্ট প্লান প্রতিস্থাপন, উপজেলা ভিত্তিক আইসোলেশন ওয়ার্ডগুলি কার্যত কোন কাজে আসেনি। এছাড়া উপজেলা ভিত্তিক আইসোলেশনে থাকা রোগীদের তেমন কোন সেবা দেয়া হয়নি সিভিল সার্জন অফিসের মাধ্যমে। এসবের মধ্যে বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনা দ্বিতীয় ধাক্কা বা ঢেউ সামলাতে এখন থেকেই খুলনার চিকিৎসা ব্যবস্থা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা ঢেলে সাঁজাতে হবে।

খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ রাশিদা সুলতানা খুলনা গেজেটকে বলেন, করোনা প্রতিরোধে দুর্বল ব্যবস্থা করে সবাইকে আক্রান্ত করে হাসপাতালে ঠেলে দিলে লাভ হবে না। সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে, মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্য বিধি । এরপরও যারা আক্রান্ত হবে, হাসপাতালে আসবে তাদের সঠিক চিকিৎসার সেবা প্রদানের মাধ্যমে দ্রুত সুস্থ করতে হবে।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মুন্সি রেজা সেকেন্দার খুলনা গেজেটকে বলেন, করোনা মোকাবেলায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল একাই সামনে থেকে ভুমিকা রেখেছে। এই হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা খুলনার করোনা সফলভাবে মোকাবেলা করেছে।

খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ বলেন, করোনা মোকাবেলায় খুলনা জেলা সফল হয়েছে। অত্যন্ত খারাপ পরিস্থিতি সফল ভাবে মোকাবেলা করে বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আবারও যদি সংক্রমণ বাড়ে আগেই খেয়াল করে সব বিষয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

খুলনা গেজেট /এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!