“নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে রয়েছ নয়নে নয়নে, হৃদয় তোমারে পায় না জানিতে, হৃদয়ে রয়েছ গোপনে” এ কবিতার মধ্য দিয়ে আজ ১০ মে (বুধবার) বেলা ১১টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কবি জীবনানন্দ দাশ একাডেমিক ভবনে কলা ও মানবিক স্কুলের আয়োজনে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে “একুশ শতকে রবীন্দ্রনাথ” শীর্ষক এক স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়।
কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন ও বাংলা ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. রুবেল আনছারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের মূলবক্তা ছিলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সুরঞ্জন মিদ্দে। তিনি রবীন্দ্রনাথের জীবন, কর্মকাণ্ড ও সমাজব্যবস্থা নিয়ে তাঁর চিন্তাধারা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ আমাদের সত্তার সাথে মিশে আছেন। একুশ শতকেও মানুষকে বেঁচে থাকার জন্য রবীন্দ্রনাথের জীবন ও তাঁর সৃষ্টিকে অনুধাবন এবং অনুসরণ করতে হবে। আধুনিক শিক্ষা, শিল্পের বিকাশ, বিজ্ঞান, দর্শন, অর্থনীতিসহ সবক্ষেত্রেই তাঁর অবদান রয়েছে। তিনি সবসময়ই সৃজনশীল চিন্তাভাবনা করতেন। তিনি ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার লাভের মাধ্যমে বাংলা ভাষাকে বিশ্বসাহিত্যের দরবারে পৌঁছে দেন। বাঙালির চিন্তা-চেতনা-মনন, আবেগ, অনুভূতিসহ এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে তাঁর সৃষ্টিশীলতার ছোঁয়া পড়েনি। গরীব ও অসহায় মানুষের কথা চিন্তা করে তিনি নোবেল পুরস্কার থেকে প্রাপ্ত অর্থ দ্বারা সমবায় সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
এরপর রবীন্দ্রনাথের কবিতা আবৃত্তি করেন পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতনামা আবৃত্তি শিল্পী কাজল সুর। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী সঙ্গীতসহ রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে সুরের ধারায় দর্শকদের মোহিত করেন পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী কাজী কামাল নাসের। রবীন্দ্রগানের সঙ্গে জাদুর মায়ায় দর্শককে বিস্ময়ে বিভোর করে তোলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত নাট্যকার ও জাদুশিল্পী সুভাষ চক্রবর্তী। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটির সার্বিক সমন্বয় করেন বিশিষ্ট সম্পাদক, চলচ্চিত্র-গবেষক ও নৃত্যশিল্পী সুশীল সাহা।
এর আগে অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. রুবেল আনছার। এ সময় আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দের পক্ষ থেকে তাকে উত্তরীয় পরিয়ে দেয়া হয়। তিনি স্বরচিত চারটি গ্রন্থ ও স্কুলের জার্নাল উপহার দেন। অনুষ্ঠানে ভারত থেকে আগত অতিথি হিসেবে আইভি পাল, অরুণিমা সাহা, প্রীতম মজুমদার এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ও ইতিহাস ডিসিপ্লিনের প্রধানসহ অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/ এসজেড