আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়িয়েছে জামায়াতে ইসলামী। ঈদুল ফিতরের পরপরই এ বিষয়ে কেন্দ্র থেকে দলের মাঠপর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জামায়াতের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, দলের নীতিনির্ধারণী পর্ষদ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদে আলোচনার পর উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার এ সিদ্ধান্ত হয়।
এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে শুরুর দিকে কিছুটা নমনীয় ছিল জামায়াত। জয়ের সম্ভাবনা আছে, এমন উপজেলাগুলোতে নির্বাচন করার ব্যাপারে দলের মাঠপর্যায়ে বার্তা ছিল। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও জেলা কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
সিদ্ধান্ত বদলের বিষয়ে জামায়াতের নেতারা বলছেন, তাঁরা হিসাব-নিকাশ করে দেখেছেন, ভোট হবে একটা নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে। এতে অংশ নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের পক্ষে ভালো করার সুযোগ কম।
তবে প্রথম পর্বের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখের আগেই সিদ্ধান্ত বদল করে দলটি। তবে এ বিষয়ে জামায়াত কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। নির্বাচন না করার ব্যাপারে গত শনিবার জেলা ও উপজেলার দায়িত্বশীল নেতাদের মাধ্যমে মৌখিকভাবে বার্তা পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম বলেন, ‘জামায়াত উপজেলা নির্বাচন করছে না। সবকিছু পর্যালোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাঁরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। এরপরও কেউ প্রার্থী হলে, তাঁর বিষয়ে সংগঠন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’
বার্তায় বিএনপি যা বললো
বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়, বিএনপি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে এবং প্রশাসন ও পুলিশের একপেশে ভূমিকার জন্য এর আগেও জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জন করেছে। এখনও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি। বিদ্যমান পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ায় আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার যৌক্তিক কারণ রয়েছে। বিএনপি ৮ মে থেকে শুরু হওয়া সকল ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বর্তমান সরকারের আমলে দেশে জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের কোনো নির্বাচনই অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত প্রার্থীদেরই নির্বাচন কমিশন বিজয়ী ঘোষণা করে। প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী দলের প্রার্থীদের নানাভাবে হামলা, মামলা ও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়া এবং নির্বাচনী প্রচারে হামলা এবং শারীরিক আক্রমণসহ পথে পথে বাধা দেওয়া হয়। অনেককেই মনোনয়নপত্র জমা দিতেও দেওয়া হয়নি।
এর আগে সোমবার দুপুরে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের বিষয়ে একই মনোভাবেব কথা জানিয়েছিলেন রুহুল কবির রিজভী। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিএনপির আগের সিদ্ধান্ত (অংশগ্রহণ না করা) বহাল আছে। সেই অনুযায়ী কাজ হচ্ছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এটা আমরা আগেই পরিষ্কার করেছি। সবকিছু আমরা বলেছি। ওই সিদ্ধান্তটাই এখনো বহাল আছে। নতুন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আগেই সিদ্ধান্ত বহাল আছে। ওটা তো নাকচ হয়নি। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এইচ