সাতক্ষীরার আশাশুনিতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় কমপক্ষে ২০টি বাড়ি ভাঙচুর ও হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২১ মে) রাতে ও বুধবার (২২ মে) সকালে নব নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম ও প্রতিদ্বন্দ্বি পরাজিত প্রার্থী শাহনেওয়াজ ডালিমের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ. ভাঙচুর ও হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫ জন। আহতদের মধ্যে ২ জনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ এ পর্যন্ত ১৩জনকে আটক করেছে।
পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহ নেওয়াজ ডালিম জানান, বিজয়ী চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিমের কর্মী মঙ্গলবার রাতে পিরোজপুর গ্রামের মিলন পারভেজের নেতৃত্বে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পিরোজপুর গ্রামের রিপন হোসেনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। পরে একই গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম, সাইফুল ইসলামসহ পিরোজপুর গ্রামের কমপক্ষে ৫টি বাড়ি তছনছ করে সন্ত্রাসীরা। বুধবার সকালে বিচ্ছিন্ন হামলায় ভাঙচুর হয় গোয়ালডাঙ্গা গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম, কাদাকাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দীপঙ্কর সরকার দ্বীপ, তেতুলিয়া গ্রামের সাইফুর রহমান, লিটন সরদার, প্রতাপনগরের আব্দুস সামাদসহ কমপক্ষে ২০জনের বাড়ি। এছাড়া প্রতিপক্ষের হাতুড়ি পেটায় গুরুতর আহত হয়েছেন চেউটিয়া গ্রামের আনিসুর রহমান ও তোয়ারডাঙ্গা গ্রামের ইমরান হোসেনসহ কমপক্ষে ৫ জন।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীর কাছের লোক বিছট গ্রামের আলমগীর আলম লিটনের লোকজন বুধবার সকালে স্থানীয় বিছট বাজারে চায়ের দোকানসহ কয়েকটি দোকান বন্ধ করে দিয়েছে। এসময় তার বাহিনীর সদস্যরা বেশ কয়েকজনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ কওে তাদেরকে মারপিট করার হুমকি দিয়ে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। ফলে ভয়ে অনেকে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে।
তবে বিজয়ী প্রার্থী এবিএম মোস্তাকিমের দাবি, এটা নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা নয়, এটি আসলে মানুষের দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহি:প্রকাশ। ডালিমের কর্মী-সমর্থকরা গুনাকরকাটি গ্রামের মোশাররফ হোসেন, গদাইপুর গ্রামের আব্দুস সামাদ ও বড়দল ইউপি চেয়ারম্যান জগদীশ সানার বামনডাঙ্গাস্থ বাড়ি ভাঙচুর করেছে।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মতিউর রহমান সিদ্দিকী জানান, পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সহিংসতার ঘটনায় পিরোজপুর গ্রামের আব্দুর রহমান, আবুল কালাম আযাদ, জাহাঙ্গীর হোসেনসহ ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে। প্রত্যেকটি ঘটনায় আলাদা আলাদ মামলা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।
খুলনা গেজেট/এমএম