পৃথিবীর ফুসফুসখ্যাত আমাজন বনাঞ্চলের কলম্বিয়া অংশে প্রাচীন গুহাচিত্রের এক বিশাল ভাণ্ডার খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা। এগুলোতে এমন কিছু প্রাণীর চিত্র আঁকা আছে, যেগুলো বরফযুগে বিচরণ করত।
ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটারের গবেষক দল বলেছে, ১১ হাজার ৮০০ থেকে ১২ হাজার ৬০০ বছর আগের গুহাচিত্র সেগুলো। বৃহস্পতিবার সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আমাজনে এখন সারাবছর বৃষ্টিপাত হয়। এ জন্য একে বলা হয় রেইনফরেস্ট বা অতিবৃষ্টির অরণ্য। তবে গুহাচিত্রে যেসব প্রাণীর অবয়ব অঙ্কন করা হয়েছে সেগুলো বরফযুগে বিচরণ করত। সে হিসেবে ধরে নেওয়া যায় ১২ হাজার বছর আগে আমাজন ছিল বরফে ঢাকা।
লাতিন আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ার সেরানিয়া লা লিন্দোসার তিনটি ভিন্ন পাহাড়ে (যেগুলো একসময় গুহা ছিল) বিপুল সংখ্যক প্রাচীন সেসব চিত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কেরো আজুল পাহাড়ে সবচেয়ে বেশি চিত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। বরফযুগে আমাজন অঞ্চলের মানুষ কীভাবে টিকে ছিল, তার একটি ধারণা গুহাচিত্রগুলো থেকে পাওয়া যায়। এ ছাড়া ওই সময়কার হাতি, উট, ঘোড়াসহ অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর আকৃতি কেমন ছিল তারও ধারণা পাওয়া যায়।
ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটারের প্রত্নতাত্ত্বিক মার্ক রবিনসন বলেন, পশ্চিম আমাজন বনাঞ্চলে প্রথম যারা বসতি স্থাপন করে সম্ভবত তাদের আঁকা গুহাচিত্র ওগুলো। তাদের জীবন-যাপন, প্রকৃতি-পরিবেশ সম্পর্কে অবিশ্বাস্য সব তথ্য পাওয়া গেছে ওইসব চিত্র থেকে। তারা সে সময় দৈত্যাকার সব প্রাণী শিকার করত খাবারের চাহিদা মেটাতে। এমনও প্রাণী সে সময় ছিল, যা একেকটা গাড়ির সমান (ব্যক্তিগত কার)।
মানুষ প্রথম ঠিক কবে ওই আমাজন অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছিল তার পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসন্ধান করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, আবিস্কৃত গুহাচিত্রগুলো যে সময় আঁকা হয়েছিল সে সময় বরফযুগ থেকে বর্তমানের অতিবৃষ্টির অরণ্যে (রেইনফরেস্ট) পরিণত হতে শুরু করেছিল আমাজন। ছবি আঁকার আগে পাথর সমান করতে আগুনের ব্যবহার করত সে সময়কার বাসিন্দারা। ছবি আঁকতে বিভিন্ন গাছের ছাল-বাকল থেকে রং তৈরি করে তাও ব্যবহার করত তারা।
খুলনা গেজেট/কেএম