খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  অ্যান্টিগা টেস্ট: তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ২৬৯/৯, পিছিয়ে ১৮১ রানে

অগ্রহায়ণের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত খুলনার জনজীবন

তানভীর আহমেদ

গতকাল রাত থেকেই খুলনাসহ দেশের সকল জেলায় থেমে থেমে চলছে বৃষ্টিপাত। অগ্রহায়ণের এ বৃষ্টিকে অনেকেই বলছেন শীত নামানোর বৃষ্টি। আর এমন বৃষ্টিতে ঠান্ডা অনুভূত হওয়ায় গরম কম্বলে মজেছেন অনেকে। কেউবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসময়ের এই বৃষ্টিকে নিয়ে দিচ্ছেন নানান স্টাটাস।

তবে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য অসময়ের এই বৃষ্টি যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। হালকা থেকে মাজারি বৃষ্টিতে তারা পড়েছেন সীমাহীন দুর্ভোগে।

টানা বৃষ্টিতে আয়ে পড়েছে টান, সেই সাথে বেশি কষ্টে ফেলেছে ঠান্ডা ও শীতল আবহাওয়া। বৃষ্টির ঠান্ডা পানিতে ভিজে অসুস্থ হওয়ার উপক্রম নগরীর অসংখ্য শ্রমজীবীর। তবুও জীবন-জীবিকার তাগিদে ভিজে ভিজেই কাজ করছেন তারা।

আজ বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে খুলনার শিববাড়ি, ময়লাপোতা, দৌলতপুর, গল্লামারি এলাকা ঘুরে চোখে পড়েছে এমন দৃশ্য।

সরেজমিনে দেখা যায়, কর্মব্যস্ত শিববাড়ি মোড় ও নিউমার্কেটের আশেপাশের এলাকায় তেমন লোকজনের উপস্থিতি নেই। রাস্তা-ঘাটও অন্যদিনের তুলনায় ফাঁকা। বিভিন্ন মোড়ে জবুথবু হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন রিকশা, ইজিবাইক ও সিএনজি চালকরা।

শিববাড়ি মোড় এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছাড়া নেই সাধারণ মানুষের আনাগোনা।

বৃষ্টির জন্য সকাল থেকে কাঙ্ক্ষিত যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান সিএনজি চালক রাব্বি। তিনি বলেন, বৃষ্টিতে রাস্তায় কোন মানুষজন নেই। অন্যদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বের হয়। আজকে বৃষ্টির কারণে অনেকেই বের হয়নি। যার কারণে সকাল থেকে তেমন কিছুই আয় করতে পারিনি, আর ঠান্ডা তো আছেই৷ কষ্ট হচ্ছে। হাত-পা বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। তারপরও ঘরে বসে থাকলে তো আর পেট চলবে না।

আবার বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষা পেতে মাথায় ছোট পলিথিন এবং শরীরে বড় পলিথিন কেটে পরতে দেখা যায় নগরীর অধিকাংশ রিকশা চালককে।

বৃষ্টি কষ্ট বাড়িয়েছে উল্লেখ করে ফয়সাল নামের আরেক ইজিবাইক চালক বলেন বলেন, আমি দৌলতপুরের গ্যারেজে থাকি। গতকাল রাতের বৃষ্টিতে ভিজে গেছি। তার ওপর আবার সকাল থেকে বৃষ্টিতে ভিজে অবস্থা খারাপ। সকাল থেকে মাত্র ৩০০ টাকা ইনকাম করছি৷ আজ রাস্তা ঘাটে কোন মানুষজন নাই। একটু পরেই গাড়ি নিয়ে চলে যাব।

মাঝারি এই বৃষ্টিতে জনজীবন বিপাকে পড়লেও চাহিদা বেড়েছে খাবার ডেলিভারির কাজ করা ফুড রাইডারদের। বৃষ্টিতে মুখরোচক খাবারের চাহিদা বাড়ায় বৃষ্টি মাথায় নিয়েই ছুটতে হচ্ছে তাদের।

ময়লাপোতা মোড়ে একটি খাবারের দোকানের ফুড রাইডার হিসেবে কাজ করেন আরাফাত। তিনি বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ১৪টি খাবারের অর্ডার পৌঁছে দিয়েছি ৷ বৃষ্টির কারণে মানুষজন কম বের হচ্ছেন। আর বৃষ্টিতে আমাদের কষ্ট তো স্বাভাবিক বিষয়।

আবহাওয়া অফিস বলছে, বৃষ্টিপাতের এ ধারা বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দিনভর অব্যাহত থাকবে। শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) বৃষ্টির পরিমাণ কমে যাবে। তবে বৃষ্টি কমে গেলেও আকাশ মেঘলা থাকবে। একইসঙ্গে আজ দিন ও রাতের তাপমাত্রা ২ থেকে ৪ ডিগ্রি পর্যন্ত কমতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।

এছাড়া, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধা ৬ টা পর্যন্ত খুলনায় ২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (৬ ডিসেম্বর) খুলনায় বৃষ্টির পরিমান ছিলো ১ মিলিমিটার। এ সময়ে দেশের সর্বোচ্চ ২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে। এদিকে বৃষ্টি হওয়ায় তাপমাত্রা কমে গিয়ে আজ গত কয়েকদিনের তুলনায় শীত একটু বেশি অনুভূত হচ্ছে।

খুলনা গেজেট/ টিএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!