খুলনা মহানগরীতে রাত-দিন ২৪ ঘন্টা অক্সিজেন সিলিন্ডার ও পালস অক্সিমিটারের সেবা দিচ্ছে ‘রোটারি খুলনা অক্সিজেন ব্যাংক’। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫জন রোগীকে সংগঠনটির পক্ষ থেকে সেবা দেওয়া হচ্ছে। মহানগরীর মধ্যে যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে তবে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তার বাড়িতে সংগঠনের ষ্টাফরা পৌঁছে দিচ্ছে অক্সিজেন সিলিন্ডার ও পালস অক্সিমিটার। করোনা মহামারীর সময় এমন মানবেতর সেবার কার্যক্রম শুরু হয়েছে গত ২৯ জুন।
এদিকে গতকাল শনিবার রাত (১৮জুলাই) পর্যন্ত ৮৮জন রোগীকে সংগঠনটির পক্ষ থেকে অক্সিজেনের সেবা দেওয়া হয়েছে। সংগঠনটির নিজস্ব অর্থে ক্রয় করা আছে ২৪টা অক্সিজেন সিলিন্ডার। তবে চলতি সপ্তাহে আরও ৬টি অক্সিজেন সিলিন্ডার বাড়বে। এর ফলে চাহিদামত সেবা দেওয়া আরও সহজতর হবে।
জানা যায়, নগরবাসীকে বিপদকালীন সময়ে সেবা দেওয়ার জন্য আপাতত নগরীর সামছুর রহমান রোডের বাংলাদেশ ডায়াগনষ্টিক সেন্টারকে অস্থায়ী অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সংগঠনের কাজের সুবিধার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে দু’জন ষ্টাফ। পাশাপাশি রোগীদের সার্বিক সহযোগিতার জন্য রোটারিয়ান ডা: এম বি জামান, পলাশ কুমার সাহা, মাহজাবিন মুবিনা হেমা, নুর ইসলাম এবং রোমিও হোসেন পিয়াস সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন।
একটি সূত্র জানায়, করোনা মহামারীতে অনেকেরই শ্বাস-নিশ্বাসে কষ্ট হওয়ার কারণে প্রয়োজন হয় অক্সিজেন। কিন্তু স্বল্প দামের এই অক্সিজেন সেবা নিয়ে চলছে এখন ব্যবসা। যার ফলে খুলনাতেই একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার সংগ্রহ করতে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাবি করা হয়। ‘রোটারি খুলনা অক্সিজেন ব্যাংক’ ইতিমধ্যে খুবই সহজ শর্তে অসুস্থ রোগীদের অক্সিজেন সিলিন্ডার ও অক্সিমিটার সরবরাহ করছেন। যার জন্য ফেরতযোগ্য জামানত দেওয়া লাগছে মাত্র ১০ হাজার টাকা। এছাড়া পাঁচদিনের জন্য সার্ভিস চার্জ ১ হাজার টাকা, প্রতিবার অক্সিজেন রিফিল করতে ৩’শ টাকা এবং পালস অক্সিমিটারের জন্য পাঁচদিনে ৩’শ টাকা চার্জ নেওয়া হচ্ছে।
রোটারি খুলনা অক্সিজেন ব্যাংক প্রকল্পের চেয়ারপার্সন ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী-৩ ইঞ্জিনিয়ার মশিউজ্জামান খান এর সাথে কথা হয় খুলনা গেজেটের। তিনি বলেন, গত ২৩ জুন তার নিকট আত্মীয়ের শ্বাস কষ্টের কারণে অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু অনেক যোগাযোগ করার পরও প্রয়োজনের সময় মেলেনি। এর কিছুদিন পরই আবার এক আত্মীয়ের প্রয়োজন হয় অক্সিজেন কিন্তু সময়মত না পাওয়ার তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার পর থেকে তিনি নিজেই খুলনা এমন একটি সেবা দেওয়ার উদ্যোগ নেন। তার এই উদ্যোগে তিনি অল্প সময়েই ব্যাপক সাড়া পান। ঢাকা-খুলনাসহ বিভিন্ন স্থানের রোটারিয়ানরা তাকে সহযোগিতা করেছেন। তিনি আরও বলেন, নি:শ্বাসের কষ্ট খুবই ভয়াবহ। সাধারণ মানুষ সহজে যেন প্রয়োজনের সময় অক্সিজেনের সুবিধা পায় সেই উদ্দেশ্যেই আমাদের পথচলা। চলতি সপ্তাহে আমাদের অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা আরও বাড়বে। তখন হয়ত আরও মানুষকে এই বিপদের সময় সহযোগিতা করতে পারব।
খুলনা গেজেট / এনআইআর