রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় আসামির তালিকায় বিএনপির মৃত নেতার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে দাবি করেছেন দলটির আইনজীবীরা। এ ঘটনাকে তারা পুলিশ বাহিনীর ভঙ্গুরতার নিদর্শন বলে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে নিউ মার্কেটে সংঘর্ষের মামলায় মঙ্গলবার বিএনপির ১৪ নেতা-কর্মীকে আগাম জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এই জামিন আদেশ দিয়েছে। আগাম জামিনপ্রাপ্তদের ছয় সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জামিন শুনানি শেষে আদালত থেকে বেরিয়ে আসার সময় সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘নিউ মার্কেটে সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে চারটি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটিতে আসামিরা অজ্ঞাত। আরেকটি মামলায় বিএনপির নিউ মার্কেট থানার সভাপতিসহ সর্বমোট ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।’
এজাহারে নাম উল্লেখ করা আসামিদের সবাই বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের দায়িত্বশীল নেতা বলেও উল্লেখ করেন এই আইনজীবী।
তিনি বলেন, ‘উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে এই ২৪ আসামির মধ্যে ২৩ নম্বর আসামি দুই বছর আগে মারা গেছেন। চার নম্বর আসামি ৭ বছর ধরে বিদেশে আছেন। এই মামলার মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর ভঙ্গুরতা আরেকবার প্রমাণ হয়েছে।’
পুলিশের সমালোচনা করে কায়সার কামাল বলেন, ‘পুলিশ এমন একজনের বিরুদ্ধে মামলা করল যিনি জীবিত নন। ওনার অপরাধ ছিল, উনি জীবিত থাকা অবস্থায় বিএনপির রাজনীতি করতেন। তার মানে মৃত বিএনপি নেতাও আজ পুলিশের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং ন্যক্কারজনক।’
আগাম জামিন পাওয়া নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছেন- আমীর হোসেন আলমগীর, মিজান, হাসান জাহাঙ্গীর মিঠু, হারুন হাওলাদার, শাহ আলম সন্টু, শহীদুল ইসলাম শহীদ, জাপানী ফারুক, মিজান বেপারী, আসিফ, রহমত, বিল্লাল, মনির, জুলহাস ও বাবুল।
কায়সার কামাল বলেন, ‘আদালত সন্তুষ্ট হয়ে তাদের জামিন দিয়ে ছয় সপ্তাহের মধ্যে সেশনস কোর্টে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে।’
সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের কাজে বাধা দেয়া, হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে একটি মামলা করে পুলিশ। সে মামলায় বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন সরদার এক নম্বর আসামি। তিনি নিউ মার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। গত শুক্রবার মকবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নিউ মার্কেট থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হালদার অর্পিত ঠাকুর মকবুলকে আদালতে উপস্থিত করে তার বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।