খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে ৪ জন নিহত
  শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম গ্রেপ্তার
  নিউইয়র্কে ছুরিকাঘাতে নিহত ২
মসজিদকে গীর্জা বলে গুজব রটিয়ে হত্যা

৬ বছরেও হয়নি সোনাইমুড়ির নৃশংস জোড়া খুনের বিচার

নিজস্ব প্রতিবেদক, নোয়াখালী

“আমার স্বামী সেদিন চুরি করতে বা ডাকাতি করতে সেখানে যায়নি। গিয়েছিলো মসজিদ নির্মাণ করতে। গুজব রটিয়ে তারা তাকে শুধু হত্যাই করেনি, নির্মমভাবে হত্যার পর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। আজও তার বিচার হয়নি।” কান্নাজড়িত কণ্ঠে এ কথাগুলো বলছিলেন নিহত ইব্রাহীম হোসেন রুবেলের স্ত্রী হাজেরা আক্তার।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার চাষিরহাট ইউনিয়নের পোরকরা গ্রামে গত ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ নির্মানাধীন মসজিদকে গীর্জা বলে গুজব রটিয়ে হত্যা করা হেযবুত তওহীদ আন্দোলনের দুই সদস্য ইব্রাহীম হোসেন রুবেল ও সোলাইমান খোকন নামে দুই ব্যক্তিকে।

জোড়া খুনের বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতের স্বজন ও হেযবুত তওহীদ সংগঠন। বুধবার (১৬ মার্চ) বেলা ১১টায় নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সহিদ উদ্দিন এস্কান্দার কচি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

‘‘সংবাদ সম্মেলনে সেদিনের নৃশংস হামলায় নিহত সোলায়মান খোকনের স্ত্রী সায়রা আক্তার রিমা জানান, হত্যাকান্ডের দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও তারা আজও বিচার পায়নি। এসময় তিনি তার স্বামী হত্যার ন্যায় বিচার দাবি করেন।’’

হেযবুত তওহীদের জেলা সভাপতি গোলাম কবির লিখিত বক্তব্যে হেযবুত তওহীদের দুই সদস্যের হত্যার বিবরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ নোয়াখালীতে গুজব রটিয়ে নির্মাণাধীন মসজিদকে গির্জা বলে গুজব রটিয়ে দিয়ে, মিথ্যা তথ্যপূর্ণ হ্যান্ডবিল বিলি করে ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণি ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে তারা বর্বরোচিত স্বশস্ত্র হামলা চালায়। দুজন সদস্যকে প্রচণ্ড প্রহারের পর তাদের হাত পায়ের রগ কেটে দেয়। তাদের চোখ উপড়ে নেয়। ধারালো ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করে। মৃতদেহে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

গোলাম কবির বলেন, ঘটনার আগে থেকেই সেই স্থানীয় স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহল ও ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণির ষড়যন্ত্র সম্পর্কে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছিল। আমরা মনে করি, কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে উদ্যোগ নিলে এই মর্মান্তিক নজিরবিহীন ঘটনাটি ঘটত না। এই ঘটনার প্রায় আড়াই বছর পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি করে এই মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়। বহু আসামি আইনের আওতায় আসেনি, যারা এসেছে তারা রাজনৈতিক হয়রানির ধুয়া তুলে সহজেই জামিনে বেরিয়ে এসে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ বিচার প্রক্রিয়ায় কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছেনা।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি, তারা আবারও হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, মিথ্যাচার চালাচ্ছে এবং হামলার উসকানি দেওয়া আরম্ভ করেছে। বিশেষ করে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বিরাজমান শান্তিময় পরিস্থিতিকে অশান্ত করে তোলার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এই অপপ্রচারকারী ও হামলার চক্রান্তকারী কুচক্রীমহলকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।

হেযবুত তওহীদের জেলা সভাপতি বলেন, সোনাইমুড়ীতে যেখানে গুজব-সন্ত্রাসীরা তান্ডবলীলা চালিয়েছিল, সেই ধ্বংসস্তুপের উপরেই বর্তমানে আমরা নির্মাণ করেছি চাষীরহাট উন্নয়ন প্রকল্প। ভেঙ্গে গুরিয়ে দেওয়া সেই মসজিদটি পুণনির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে এখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে হেযবুত তওহীদের নোয়াখালী জেলা সভাপতি মো. গোলাম কবিরের সভাপতিত্বে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন প্রশ্নে জবাব দেন দৈনিক বজ্রশক্তির সহকারী সাহিত্য সম্পাদক রাকিব আল হাসান, চাষিরহাট উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো: মহিউদ্দিন।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!