কাউকে সন্দেহ হলে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। এতে অনেকে হয়রানির শিকার হন বলে অভিযোগ রয়েছে। এই ধারাটি বাতিলের জন্য জনমতের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সংস্কার কমিশন সুপারিশ করবে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া সংস্কার কমিশনের তরফ থেকে অনলাইনে জনগণের মতামত নেওয়া হয়।
এতে অন্তত ২০ হাজার মানুষ অংশ নেন। তাঁদের বেশির ভাগই ৫৪ ধারা বিলোপের পক্ষে।
বিদ্যমান আইনে সাদা পোশাকে কাউকে গ্রেপ্তার করার এখতিয়ার না থাকলেও এ ঘটনা হরহামেশাই ঘটছে। গুম হওয়া ব্যক্তিদের সাদা পোশাকে উঠিয়ে নেওয়ার অভিযোগই বেশি।
এ কারণে সাদা পোশাকের অভিযান কিভাবে বন্ধ করা যায় পুলিশ সংস্কার কমিশনে সে বিষয়েও আলোচনা চলছে বলে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন।
গত ৩ অক্টোবর পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠনের পর গত ৩১ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং ওই কমিশনের সদস্যসচিব আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত ‘কেমন পুলিশ চাই’ শিরোনামে জনমত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে পুলিশ সংস্কারের বিষয়ে কমিশনের ওয়েবসাইটে মতামত চাওয়া হয়। সেখানে ১৭টি প্রশ্নের মধ্যে অন্যতম ছিল ৫৪ ধারা থাকবে কি না? এ ছাড়া জনবান্ধব, জবাবদিহিমূলক, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, দক্ষ আধুনিক, নিত্যনতুন অপরাধ শনাক্তে উন্নত প্রশিক্ষণ, মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, নিরপেক্ষ আইনের শাসনের প্রতি অনুগত বিষয়েও মতামত পাঠিয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
সংস্কার কমিশনের সদস্য ও মানবাধিকার কর্মী এ এস এম নাসিরউদ্দিন এলান বলেন, ‘আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
সূত্র জানায়, পুলিশ সংস্কার কমিশনে পুলিশকে যাতে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা না যায় সে কারণে একটি কমিশনের সুপারিশ করার কথাও চিন্তা করা হচ্ছে। পুলিশকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে জেলা পর্যায়ে কার্যকর একটি আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়েও গুরুত্ব দিচ্ছে কমিশন।
পুলিশের দ্বারা গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনকে দ্রুত জবাবদিহির আওতায় আনার বিষয়েও সুপারিশ থাকবে। পুলিশের কাজকর্মের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সবার জন্য উন্মুক্ত, স্থায়ী ‘অভিযোগ কমিশন’ স্থাপনের বিষয়েও মতামত দিয়েছেন অনেকে।
খুলনা গেজেট/এইচ