ভারতের হলদিয়া বন্দর থেকে চাল নিয়ে জাহাজ মোংলা বন্দরে ভিড়েছে। সপ্তাহ খানেক পরে এই বন্দরে মিয়ানমারের চাল আসবে। মার্চেই আসবে পাকিস্তানের চাল। সেদেশের পতাকাবাহী জাহাজ ২৫ হাজার মেট্রিকটন চাল নিয়ে ভিড়বে। সেই বাসমতি নামের চাল। ১৯৭১ সালে এ চাল বন্দরে ভেড়ে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এই প্রথম পাকিস্তানী চাল নিয়ে জাহাজ আসছে। প্রথমে চট্টগ্রাম বন্দর এবং পরবর্তীতে মোংলা বন্দরে পৌছাবে।
সূত্র জানান, ৫ আগস্প পট পরিবর্তনের পর চাল আমদানীর জন্য বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে জি-টু স্বাক্ষরিত হয়। পাকিস্তানী ট্রেডিং কর্পোরেশন বাসমতি নামের এই চাল সরবরাহ করেছে। ২৫ হাজার মেট্রিকটন চাল নিয়ে করাচির পোর্ট কাসিম থেকে জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। পাকিস্তানী দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
এক্সপ্রেস নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মত পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সরকারী পর্যায়ে সরাসরি বাণিজ্য পুনরায় শুরু করেছে। সরকার অনুমোদিত প্রথম কার্গো বন্দর কাসিম ছেড়েছে।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কে এটি একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ, কারণ বাংলাদেশ ট্রেডিং কর্পোরেশন অফ পাকিস্তান (টিসিপি) এর মাধ্যমে ৫০ হাজার টন পাকিস্তানী চাল কিনতে সম্মত হয়েছে। চুক্তিটি ফেব্রুয়ারির শুরুতে চূড়ান্ত করা হয়েছিল।
চালের চালানটি দুটি ধাপে সরবরাহ করা হবে, যার মধ্যে প্রথম ২৫ হাজার টনের চালানটি এখন বাংলাদেশে পৌঁছে যাচ্ছে। দ্বিতীয় চালানটি মার্চের শুরুতে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। এই বাণিজ্য চুক্তি দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করবে এবং সরাসরি জাহাজ চলাচল সহজতর করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রথমবারের মতো, সরকারি পণ্য বহনকারী পাকিস্তান ন্যাশনাল শিপিং কর্পোরেশন (পিএনএসসি) এর একটি জাহাজ বাংলাদেশের একটি বন্দরে নোঙ্গর করবে, যা সামুদ্রিক বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই উন্নয়নকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং কয়েক দশক ধরে সুপ্ত থাকা বাণিজ্য চ্যানেলগুলি পুনরায় চালু করার ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।
চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক, খুলনা কার্যালয়ের উপ-নিয়ন্ত্রক ইন্দ্রোজিত সরকার জানান, চালের সংকট মেটাতে পাকিস্তান থেকে চাল আসছে। তার আগে মিয়ানমারের চাল পৌছাবে। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ভারতের হলদিয়া স্থলবন্দর থেকে ১১ হাজার মেট্রিকটন সিদ্ধ চাল মোংলা বন্দরে ভেড়ে। পাকিস্তান থেকে আসা চাল প্রথমে চট্টগ্রাম বন্দরে এবং পরবর্তীতে ৪০ শতাংশ মোংলা বন্দরে খালাস হবে।
খুলনা জেলা সহকারি খাদ্য নিয়ন্ত্রক (অতিরিক্ত দায়িত্বে) মো. তৈয়েবুর রহমান জানান, বয়রা ও মহেশ্বরপাশা কেন্দ্রীয় খাদ্যগুদামে ৪৭ হাজার মেট্রিকটন চাল মজুদ আছে। উল্লিখিত দুই গুদামের ধারণক্ষমতা এক লাখ মেট্রিকটন। মজুদকৃত চালের মধ্যে অধিকাংশই ভারতীয়।
খুলনা গেজেট/ টিএ