তাকুজোয়ানশি কাইতানোর প্রতিরোধ ভাঙার পর ডোনাল্ড তিরিপানোকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর পেয়েছেন ৫ উইকেটও। চা-বিরতির পর কাইতানো ফিরেছেন ৮৭ রান করে, তিরিপানো করেছেন মাত্র ২। এরপর ব্লেসিং মুজারাবানিকে বোল্ড করে ক্যারিয়ারে ৮ম বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেছেন তিনি।
বিরতির পর ওপেনার হিসেবে অভিষেকেই জিম্বাবুয়ের হয়ে সবচেয়ে বেশি রানের স্কোর গড়েছেন কাইতানো। ১৯৯২ সালে জিম্বাবুয়ের ইতিহাসের প্রথম টেস্টে গ্রান্ট ফ্লাওয়ার করেছিলেন ৮২ রান। তবে মাত্র তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকে সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি তার। মিরাজের লেগসাইডের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে কট-বিহাইন্ড হয়েছেন তিনি সেঞ্চুরি থেকে ১৩ রান দূরেই। অবশ্য তার ইনিংস জিম্বাবুয়ে ব্যাটসম্যানদের অভিষেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ।
এরপর তিরিপানোকেও বেশিক্ষণ টিকতে দেননি মিরাজ। তাঁর নিচু হওয়া বলে এলবিডব্লু হয়েছেন তিরিপানো। আর মুজারাবানি লাইন মিস করে হয়েছেন বোল্ড। এর পর সাকিব ২৭৬ রানে গুটিয়ে দিয়েছেন জিম্বাবুয়েকে।
এর আগে প্রথম সেশনে শুধু ব্রেন্ডন টেলরের উইকেটেই সন্তুষ্ট থাকতে হলেও দ্বিতীয় সেশনে তারা পেয়েছিল আরও তিন উইকেট- সাকিব আল হাসানের দুটির পর একটি নিছিলেন তাসকিন আহমেদ।
মূলত ৪৫ বলের এক চাপে আবারও ব্যাকফুটে চলে গেছে জিম্বাবুয়ে। এ সময়ে ৪ রানের বিপরীতে পড়েছে ৩ উইকেট। দ্বিতীয় নতুন বলে আশাজাগানিয়া বোলিং করেছেন তাসকিন আহমেদ, মুভমেন্ট তেমন না মিললেও তাঁর লাইন-লেংথ ছিল দারুণ। আর সাকিবের ওপর চড়াও হওয়ার মাশুল গুনেছে জিম্বাবুয়ে।
৮০তম ওভারে গিয়ে সেশনের প্রথম উইকেট পেয়েছিল বাংলাদেশ। সাকিবকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে মেহেদী হাসান মিরাজকে ক্যাচ দিয়েছেন ডিওন মায়ার্স, কাইতানোর সঙ্গে তাঁর ৪৯ রানের জুটি ভেঙেছে তাতে।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় নতুন বল নিয়েছে ৮১তম ওভারে। পরের উইকেটটিও নিয়েছেন এক স্পিনার, সাকিব। এবার টিমাইসেন মারুমা সুইপ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন, ফিরেছেন এলবিডব্লু হয়ে। ১৭ বল খেলেও দলের স্কোরে কোনো অবদান রাখতে পারেননি মারুমা। এখন পর্যন্ত ইনিংসে সাকিবের তিনটি উইকেটই এসেছে ব্যাটসম্যানের ব্যর্থ সুইপের চেষ্টায়। পরের ওভারে তাসকিন আঘাত করেছেন, টানা ভালো বোলিংয়ের পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। তাঁর গুড লেংথের বলে দোটানায় ভুগে খোঁচা দিয়েছেন রয় কাইয়া, ফিরেছেন কোনো রান না করেই।
এর আগে তৃতীয় দিনের শুরুটা বাংলাদেশের জন্য ছিল হতাশার। দ্বিতীয় দিন শেষ করা টেলর ও কাইতানোর জুটি অবিচ্ছিন্ন ছিল প্রথম ঘণ্টার পরও। প্রথম ঘণ্টায় আগের দিনের স্কোরের সঙ্গে আরও ৬০ রান যোগ করেছিল জিম্বাবুয়ে, সেটাও মাত্র ১৪ ওভারে। দিনের শুরুতে আঁটসাঁট বোলিং করলেও পরে ইবাদত বাউন্ডারি দিয়েছেন বেশ কয়েকটি। প্রথম ঘণ্টায় টেলর ও কাইতানো মিলে মেরেছেন মোট আটটি বাউন্ডারি, ৭ চারের সঙ্গে একটি ছয় হয়েছে এ সময়ে।
দিনের ষষ্ঠ ওভারে সাকিব আল হাসানকে এনেছিলেন মুমিনুল হক। তাঁর দ্বিতীয় বলেই লং-অন দিয়ে ছয় মেরেছেন টেলর। তাঁর ফিফটিও এসেছে সে শটে। মাত্র ৫৮ বলেই বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয় ফিফটি হয়ে গেল তাঁর, টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি তাঁর ১১তম।
ক্যারিয়ারে ৬ সেঞ্চুরির পাঁচটিই টেলর করেছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে, ষষ্ঠ সেঞ্চুরির দিকেও এগোচ্ছিলেন। তবে মিরাজকে আড়াআড়ি একটা আলগা শট খেলে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। ৯২ বলে ৮১ রান করে স্কয়ার লেগে বদলি ফিল্ডার ইয়াসির আলীর হাতে ধরা পড়েছেন জিম্বাবুয়ের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক।
টেলর ফিরলেও জিম্বাবুয়েকে টেনেছিলেন কাইতানো ও মায়ার্স। ১৫৯ বলে ফিফটি পাওয়া কাইতানো এক প্রান্ত ধরে রেখেছিলেন তখনো। মাত্র ষষ্ঠ জিম্বাবুইয়ান ওপেনার হিসেবে অভিষেকেই ফিফটি পেয়েছেন তিনি। ওদিকে টেলরের পর ইতিবাচক ক্রিকেটের বিজ্ঞাপন করছিলেন মায়ার্স। ২৭ বলের ইনিংসে একটি চারের সঙ্গে মেরেছেন একটি ছয়। ১ উইকেটে ১১৪ রান নিয়ে দিন শুরু করা জিম্বাবুয়ে প্রথম সেশনে যোগ করেছিল আরও ৯৫ রান।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি