সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া, খালেদা জিয়াসহ রাজবন্দিদের মুক্তিসহ এক দফা দাবিতে ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে বিএনপি। আগামী ২৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার) এই মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবার (২২ জুলাই) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তারুণ্যের সমাবেশ থেকে এই কর্মসূচির ঘোষণা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তবে সমাবেশ কোথায় হবে সে স্থান উল্লেখ করেনি বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘এটা বিরল ব্যতিক্রম সমাবেশ। তরুণরা জেগে উঠেছে সমাবেশের মাধ্যমে। আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি। আমার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ অন্যায়ভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। তারা নিশ্চিত‒ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তারা জিততে পারবেন না। দশটির বেশি আসন পাবেন না।
সরকার গণতন্ত্রবিরোধী হলেও তারা বাইরে দেখাতে চায় যে তারা গণতন্ত্রের পক্ষে‒ এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগ না করলে এবং কুড়ি লাখ টাকা না দিলে কারো চাকরি হচ্ছে না।
ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হিরো আলম বাচ্চা ছেলে, খুব কষ্ট পেয়েছি আমি। অন্তত তাকে ভোটটা করতে দেবে, কিন্তু আওয়ামী লীগ তাকে করতে দেয়নি। ওরা এই দেশকে বাপের তালুকদারি মনে করে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, সাধারণ মানুষের টাকা নিয়ে বিদেশে পাচার করছে। জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে। ঢাকা ছাড়া কোথাও বিদ্যুতের দেখা পাওয়া যায় না। কৃষক ভাইরা সেচের জন্য বিদ্যুৎ পায় না। ডেঙ্গু চিকিৎসার বেহাল অবস্থা, হাসপাতালে সিট নেই। মশা মারার ব্যবস্থা নেই। তারা জনগণের পকেট থেকে টাকা কাটতে ব্যস্ত।
তিনি বলেন, ‘এই সরকার ভীরু, কাপুরুষ। তারা নির্বাচনে ভয় পায়। আমরা এই মুহূর্তে নির্বাচন চাই, কিন্তু তাদের অধীনে নয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। বিএনপিকে ভয় পায় বলে সরকার এত মামলা দিচ্ছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গায়েবি মামলা আবার শুরু হয়েছে। গত সাত মাসে ৫০টি গায়েবি মামলা হয়েছে, আসামি ১ হাজার ৭০১ জন। এটা কীসের আলামত। ওদিকে বিদেশিদের বলছে যে, ভালো নির্বাচন হবে। ইতোমধ্যে নতুন কৌশল শুরু করছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের মামলা শেষ করে দ্রুত সাজা দেওয়া শুরু করছে। সকল ডিসি-এসপি পছন্দ মত নিয়োগ দিচ্ছে। উদ্দেশ্য‒ এবার দিনের আলোয় কৌশল করে ভোট নিয়ে যাবে। কিন্তু এবার এটা হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই, এই কারণে অবিলম্বে এই হাসিনা সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। কাল বিলম্ব না করে পদত্যাগ করুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।’
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদল যৌথভাবে তারুণ্যের সমাবেশের আয়োজন করে। দুপুর ২টা ১৮ মিনিটে কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে এই সমাবেশ শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। তবে দুপুর ২টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরুর আগে মঞ্চ ভেঙে পড়ে। যে কারণে একটি পিকআপ ভ্যানে সমাবেশ পরিচালনা করা হয়।
প্রসঙ্গত, এক দফা দাবি আদায়ে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে আগামী ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবার রাজধানীতে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপির সমমনা ১২টি দলীয় জোটও।
খুলনা গেজেট/এমএম