চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দেড় হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৬ লাখে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে জার্মানি, ব্রাজিল, ইতালি, ফ্রান্স, রাশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫১ কোটি ৮৩ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬২ লাখ ৭৯ হাজার।
বুধবার (১১ মে) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৭০৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে সাত শতাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬২ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮৮ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৯২ হাজার ৯৫৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় পৌনে তিন লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ কোটি ৮৩ লাখ ৩৫ হাজার ২৭৯ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৪ হাজার ৪৪৯ জন এবং মারা গেছেন ২০২ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার ১৫৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩৭ হাজার ২২২ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৯ হাজার ৯০৭ জন এবং মারা গেছেন ২৭৯ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮ কোটি ৩৭ লাখ ৭৮ হাজার ৭১৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ২৫ হাজার ১০৪ জন মারা গেছেন।
ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬ হাজার ৪৪৯ জন এবং মারা গেছেন ১২৩ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৯০ লাখ ২১ হাজার ২২৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৬ হাজার ৯৭৯ জন মারা গেছেন। একইসময়ে স্পেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৪৫৮ জন এবং মারা গেছেন ৬২ জন।
রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১০১ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৪ হাজার ৫৩১ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৮২ লাখ ৩৭ হাজার ২২৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ১৫০ জনের। একইসময়ে থাইল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ২৩০ জন এবং মারা গেছেন ৫৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯ হাজার ৮৯৬ জন এবং মারা গেছেন ৬২ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৭৬ লাখ ১৪ হাজার ৮৯৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ২৩ হাজার ৪৬২ জন মারা গেছেন। গত একদিনে অস্ট্রিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ২২ জন এবং মারা গেছেন ২২ জন।
ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬ হাজার ১৫ জন এবং মারা গেছেন ১৫৮ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৬৮ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৩১ জন মারা গেছেন। একইসময়ে জাপানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩ হাজার ৬৬৪ জন এবং মারা গেছেন ৩০ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৯৫ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২০ হাজার ১৪৩ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৫ লাখ ৯৪ হাজার ৩৮৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৬৪ হাজার ৪৪৩ জনের।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২ হাজার ৪৯৬ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৩১ লাখ ১০ হাজার ১৮৫ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ২৪ হাজার ১০৩ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় অস্ট্রেলিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭ হাজার ৭২৪ জন এবং মারা গেছেন ৪৩ জন। একই সময়ে কানাডায় নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ১০২ জন এবং মারা গেছেন ৬৭ জন। গ্রিসে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৪৫৩ জন এবং মারা গেছেন ২৭ জন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।