তারকা হওয়ার পর শিডিউল পাওয়া কঠিন—এ খবর নতুন কিছু নয়। তবে তার অপেক্ষা দুই তিন বছর হতে পারে! কিন্তু বলিউড অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিত এক পরিচালককে দীর্ঘ ২০ বছর ঘুরিয়েও তাকে শিডিউল দেননি।
১৯৯৪ সালে মাধুরী যখন ‘আঞ্জাম’ সিনেমার শুটিং করছিলেন, তখন পরিচালক কুন্দন শাহ প্রথম কাজের প্রস্তাব নিয়ে যান এই অভিনেত্রীর কাছে। এ সময় তাকে একটি সিনেমার গল্প শোনান কুন্দন। গল্পটি পছন্দ হয় মাধুরীর। ওই সময়ে যে ধরনের চরিত্রে অভিনয় করছিলেন, তার থেকে অন্যরকম ছিল গল্পটি। কিন্তু চিত্রনাট্যে এক যৌনকর্মীর চরিত্রে অভিনয়ের জন্য মাধুরীকে ভেবেছিলেন কুন্দন। এ সময় তিনি ‘কেয়া কেহেনা’ সিনেমার কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তার পরিকল্পনা ছিল, ‘কেয়া কেহেনা’ সিনেমার কাজ শেষ করে মাধুরীকে নিয়ে নতুন সিনেমার কাজ শুরু করার।
গল্প পছন্দ হলেও মাধুরী সময় দিতে পারেননি। শ্রীরাম নেনেকে বিয়ে করে এ অভিনেত্রী পাড়ি জমান মার্কিন মুলুকে। বিয়ের পরে বেশ কয়েক বছর চলচ্চিত্রের দুনিয়া থেকে দূরে ছিলেন মাধুরী। ২০০৫ সালে বলিউডে ফেরার প্রস্তুতি নিতে থাকেন তিনি। এ সময় আরো একবার মাধুরীর কাছে যান কুন্দন। গুঞ্জন রয়েছে, সেবারও মাধুরী আরো কিছুটা সময় চেয়ে নেন।
২০১৩ সালে ‘ইয়ে জাওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ সিনেমার একটি আইটেম গানে নাচেন মাধুরী। তখন তৃতীয়বারের মতো মাধুরীর দ্বারস্থ হন কুন্দন। এবার আর অপেক্ষা নয়, বরং পরিচালককে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন মাধুরী। মাধুরী বলেছিলেন—‘ব্যক্তিগত জীবনে দুই সন্তানের মা হওয়ার পর পর্দায় আর যৌনকর্মী সাজার ইচ্ছা নেই।’
পরে পরিচালক কুন্দন এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, মাধুরী প্রস্তাব নাকচ করার পরে, প্রায় ১ হাজারজনের অডিশন নিয়েছিলেন তিনি। অডিশন শেষে একজনকে চূড়ান্ত করেন এই নির্মাতা। তিনিও ছিলেন দীক্ষিত। তবে মাধুরী নন, মীনাক্ষী দীক্ষিত। তাকে নায়িকা করে কুন্দন নির্মাণ করেন ‘পি সে পিএম তক’ সিনেমা। ২০১৪ সালে মুক্তি পায় এটি। একজন নারী কীভাবে যৌনকর্মী থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হন তা নিয়ে গড়ে উঠে সিনেমাটির গল্প। কিন্তু বক্স অফিসে এ সিনেমার কোনো অস্তিত্ব ছিল না। কারণ কবে মুক্তি পায় আর কবে সিনেমা হল থেকে এটি নেমে যায় তা জানতেই পারেননি দর্শকরা।
‘দেবদাস’ ও ‘কলঙ্ক’ সিনেমায় যে ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন মাধুরী, ঠিক তেমন চরিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন কুন্দন। তা ছাড়া ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে ‘দয়াবান’ সিনেমায় অভিনয় করেন মাধুরী। এতে বিনোদ মেহরার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ দৃশ্য বিতর্ক তৈরি করেছিল। কিন্তু কুন্দনকে দীর্ঘ দু’দশক অপেক্ষা করিয়ে কেন ফিরিয়ে দিলেন, তার কারণ আজও অজানা। যদিও কুন্দনের দাবি—‘মাধুরী তাকে অপেক্ষা করিয়ে রাখেননি, রূঢ়ভাবেও প্রত্যাখ্যান করেননি।
খুলনা গেজেট/কেএম