চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আমেনা বেগমকে (২৫) তার দুই বছরের শিশু রাতুলের সামনে হত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে সিআইডি। এই ঘটনায় তার স্বামী মো. রাসেলকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ মার্চ) সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
তিনি বলেন, হত্যার ঘটনার পরপরই সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরে সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ঘটনার সঙ্গে তার স্বামী রাসেলের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) রাতে ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মুক্তা ধর জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার রাসেল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানায়, প্রায় ৩ বছর আগে চট্টগ্রাম এলাকায় বসবাসের সময় আমেনা বেগমের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে উভয়ের সম্মতিতে বিয়ে হয়। তাদের ২ বছর বয়সী একটি শিশু সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর টাঙ্গাইল শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত রাসেল। সম্প্রতি আয়-উপার্জন কমে যাওয়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়ায় এবং নেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ায় রাসেল তার দ্বিতীয় স্ত্রী আমেনা বেগমের কাছ থেকে যৌতুকের দাবিতে মারধর করত। বিষয়টি আমেনা বেগম তার বাবা জামালকে জানায়। জামাল তাদেরকে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ডে কম টাকায় বাড়ি ভাড়া নেওয়ার পরামর্শ দেন। যে কারণে ১৫ দিন আগে সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়ায় ৮০০ টাকা মাসিক ভাড়ায় বসবাস শুরু করেন তারা। রাসেলের শ্বশুরও তাদের কাছাকাছি থাকত।
আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে মুক্তা ধর জানান, সীতা সুবেদার রোলিং মিল নামে একটি প্রতিষ্ঠানে রাসেল কাটারম্যান হিসেবে চাকরিতে যোগ দেয়। পাশাপাশি সীতাকুণ্ড থেকে সে তার প্রথম স্ত্রী রাশেদা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ ও টাকা নেওয়া শুরু করে। এনিয়ে ২৬ মার্চ আমেনা বেগমের সঙ্গে তার কলহের সৃষ্টি হয়। রাত আনুমানিক ১টার দিকে রাসেল সন্তানের সামনে তার মাকে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ঘটনা ভিন্নঘাতে প্রবাহিত করার জন্য মরদেহ ঘরের ভেতর রেখে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় রাসেল।
এই ঘটনায় পরদিন নিহত আমেনার ভাই বাবলু বাদী হয়ে রাসেলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। গ্রেপ্তার রাসেলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর আদালতে সোপর্দ করেছে সিআইডি।
খুলনা গেজেট/ এস আই