ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের এক বছর পূর্তির কয়েক দিন আগেই কিয়েভে আকস্মিক সফরে গেলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পোল্যান্ড সীমান্ত থেকে ট্রেনে চেপে ১০ ঘণ্টার যাত্রা শেষে তিনি কিয়েভে পৌঁছান।
নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, হোয়াইট হাউস রোববার রাতে প্রেসিডেন্টের যে কর্মসূচি প্রকাশ করে তাতে দেখা যায়, সোমবার প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটনে থাকবেন। এরপর তিনি সন্ধ্যায় ওয়ারশর উদ্দেশে রওনা দেবেন। আসলে তিনি ততক্ষণে সেখানে চলে গেছেন।
হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা জানান, শুক্রবার ওভাল অফিসে বসে বাইডেন ইউক্রেনে যাওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। তবে অত্যন্ত গোপনীয় এ সফরের পরিকল্পনা কয়েক মাস ধরে চলছিল।
বাইডেন রোববার ভোর সোয়া ৪টায় পোল্যান্ডের উদ্দেশে এয়ারফোর্স ওয়ানে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করেন। গোপনীয়তার শপথ পড়িয়ে শুধু কয়েকজন সাংবাদিককে এ তথ্য জানানো হয়। এ সময় তাঁদের ফোনও সরিয়ে নেওয়া হয়।
এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, কিয়েভে তাঁর সফর ইউক্রেনের গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অবিচল সমর্থনের প্রতিশ্রুতিকে আরও সুদৃঢ় করবে। তিনি এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিহত ইউক্রেনীয় সৈন্যদের স্মরণে তৈরি এক স্মৃতিস্তম্ভ পরিদর্শন করেন। এরপর টেলিভিশনে দুই নেতা যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন।
বাইডেন বলেন, রাশিয়া মানচিত্র থেকে ইউক্রেনকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। তবে প্রেসিডেন্ট পুতিনের যুদ্ধজয়ের স্বপ্ন মুছে গেছে। ‘কিয়েভ আমার হৃদয়ের একটি অংশ দখল করেছে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনকে যে মূল্য দিতে হয়েছে, তা খুবই চড়া। এ পর্যন্ত ত্যাগ স্বীকারও করতে হয়েছে অনেক। আমরা জানি, আগামী সপ্তাহ, বছরগুলোতে কঠিন দিন সামনে আছে।’
বাইডেন বলেন, ‘পুতিন প্রায় এক বছর আগে যখন আগ্রাসন শুরু করেছিলেন, তখন তিনি ভেবেছিলেন ইউক্রেন দুর্বল। আর পশ্চিমারা বিভক্ত। তিনি ভেবেছিলেন, তিনি আমাদের উতরে যেতে পারবেন। কিন্তু তিনি ভুল করেছিলেন।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঝটিকা সফরে গিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে মারিনস্কি প্রাসাদে দেখা করেন। ছবি- এপি।
টেলিগ্রামের এক পোস্টে বাইডেনের সঙ্গে হাত মেলানোর ছবি প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। সেখানে তিনি লেখেন, ‘জোসেফ বাইডেন, কিয়েভে আপনাকে স্বাগতম! আপনার এই সফর সব ইউক্রেনীয়ের জন্য সমর্থনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের জন্য আরও ৫০ কোটি ডলারের অস্ত্র গোলাবারুদ, ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী অস্ত্র এবং আকাশ প্রতিরক্ষা রাডার সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেন। পাশাপাশি রাশিয়ার ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স, আল-জাজিরা, নিউইয়র্ক টাইমস