ক্যারিবীয় রাষ্ট্র হাইতিতে ৭ দশমিক ২ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ১২০০ ছাড়িয়েছে। সোমবার (১৬ আগস্ট) হাইতির নাগরিক সুরক্ষা সংস্থার বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
সিএনএনের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার সকালে হাইতির পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানা এই শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত এক হাজার ২৯৭ জন মারা গেছে। আহত হয়েছেন আরও পাঁচ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি। এখনো অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।
হাইতির নাগরিক সুরক্ষা সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পটি দুই হাজার ৮৬৮টি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও পাঁচ হাজার ৪১০টি বাড়ি।
এদিকে ভূমিকম্পে দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যারিয়েল হেনরি এক মাসব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। তিনি জনগণকে সংহতি দেখানোর আহ্বান জানান।
তিনি বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে আমরা অধিক ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি পাঠাচ্ছি। আহতদের মধ্যে যাদের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন, আমরা তাদের একটি নির্দিষ্ট সংখ্যককে সরিয়ে নিয়েছি। আমরা আজ এবং আগামীকাল আরও কিছু সরিয়ে নেব।
তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে যতটা সম্ভব জীবিতদের উদ্ধার করা। আমরা জানতে পেরেছি যে স্থানীয় হাসপাতালগুলো, বিশেষ করে লেস কায়েসের হাসপাতালগুলোতে আহত, হাড়ভাঙা মানুষে ভরে গেছে।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সম্প্রদায় এই দুর্যোগে হাইতিকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
শনিবার সকালে ক্যারিবীয় দ্বীপপূঞ্জজুড়ে ভূকম্পন অনুভূত হয়। ভবন ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় মানুষজন তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে বের হয়ে আসেন। ভূমিকম্পের পর ক্যারিবীয় অঞ্চলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, হাইতির পেটিট ট্রুও ডি নিপ্পেস থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে ৭ দশমিক ২ মাত্রার এই ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ভূপৃষ্ঠ থেকে এর গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার। রাজধানী পোর্ট-অব-প্রিন্স থেকে শহরটি দেড়শো কিলোমিটার দূরে।
এটি ১১ বছর আগে হাইতিতে আঘাত হানা ৭ মাত্রার ভূমিকম্পের চেয়ে শক্তিশালী ও অগভীর। ২০১১ সালের ওই ভূমিকম্পে অঞ্চলটিতে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল। ভেঙে পড়েছিল অসংখ্য বাড়িঘর-ভবন। বহু মানুষ গৃহহীন হয়েছিল।
ভূকম্পন অনুভূত হওয়া হাইতির প্রতিবেশী দেশ কিউবার উত্তরে অবস্থিত গুয়ানতানামো শহরের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘সবাই ভীষণ ভীত-সন্ত্রস্ত। দীর্ঘদিন এত শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়নি।’ তার বাড়ি ভেঙে না পড়লেও আসবাবপত্র নড়েচড়ে গেছে বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/কেএম