বাগেরহাটের চিতলমারীতে খননকৃত পুরাতন মধুমতি নদী হস্তান্তরের আগেই স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। ওই প্রভাবশালীরা নদী ও খালের ভিতর পাঁকা স্থাপনা নির্মাণ করায় পানি প্রবাহ চরম ভাবে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। ফলে সরকারের ২৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩ টি নদী ও ৫৫ টি খাল খনন প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়ছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে খাল খনন এখনও শেষ হয়নি।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, পানি প্রবাহ ও গতি ফিরিয়ে আনতে সরকার চিতলমারীর পুরাতন মধুমতি, হক ক্যানেল ও মরা চিত্রসহ ৩ টি নদী ও ৫৫টি খাল পুনঃ খননের উদ্যোগ নেয়। এ প্রকল্পে ২৫৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়। গত বছরের (২০১৯ সাল) ২৩ ডিসেম্বর চিতলমারী সদর বাজারে মরা চিত্রা নদীর পাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মধ্যে দিয়ে খাল ও নদী খনন শুরু হয়। ইতিমধ্যে বেশ কিছু খাল খনন হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এখনও হক ক্যানেলের দু’পাড়ে প্রভাবশালীদের গড়ে তোলা অবৈধ পাকা ইমারত উচ্ছেদ হয়নি। ‘তাতেই বেধেছে গন্ডগোল।’ ওই প্রভাবশালীদের দেখাদেখি পুরাতন মধুমতি নদী হস্তান্তরের আগেই আরও কয়েকজন প্রভাবশালী পাড় দখল করে নদীর ভিতর অবৈধ পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। অনেকে আবার স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন।
খননকৃত পুরাতন মধুমতি নদীর পাড়ে দখলকারীরা হলেন শান্তিপুর ব্রীজের গোড়ায় সুকেশ মন্ডল, বোয়ালিয়া গ্রামে ভক্ত মন্ডল, বিপুল বিশ্বাস, তপন রায়, বাপ্পী, কুড়ালতলা ব্রীজের গোড়ায় রাসেক মিয়া, মান্নান গাজী, অলি গাজী ও মিন্টু শেখ সহ ১৫-২০ জন। তাদের স্থাপনায় পানি প্রবাহ চরম ভাবে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে তারা আরও জানান, এই অবৈধ দখলবাজদের কারণে সরকারের ২৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩ টি নদী ও ৫৫ টি খাল খনন প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়ছে।
এ ব্যাপারে রাসেক মিয়া জানান, তিনি খালের পাড় দখল করলেও নদীর মধ্যে তো যাননি। এতে পানি প্রবাহের কোন ক্ষতি হবে না।
তপন রায় সাংবাদিকদের জানান, তিনি এক বিশেষ ব্যক্তির সন্তান। সেই পরিচয়েই তিনি নদীর মধ্যে পাকা ইমারত নির্মাণ করেছেন। তাকে কেউ বাধা দেয়নি।
তবে বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নাহিদুজ্জামান জানান, খনন কাজ এখনও শেষ হয়নি। উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত আছে।
খুলনা গেজেট/এনএম