টেস্টে বাংলাদেশ দলের কৌশল থাকে ৭ ব্যাটসম্যানের সঙ্গে বিশেষায়িত ৪ জন বোলার খেলানো। তবে চলমান শ্রীলঙ্কা সিরিজে আরেকটু কৌশলী টাইগার টিম ম্যানেজমেন্ট। ৬ ব্যাটসম্যানের সঙ্গে একজন বাড়তি বোলার খেলিয়েছে ২ ম্যাচেই। তবুও লঙ্কানদের বিপক্ষে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবার(২৯ এপ্রিল) শুরু হওয়া দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে সফরকারী বোলারদের ভোগাচ্ছেন শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানরা।
পাঁচদিনের টেস্টের প্রথম দিনের ৯০ ওভারের খেলা শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রাম ২৯১ রান। পুরো দিনে উইকেট হারিয়েছে মাত্র একটি। এই একমাত্র অর্জনও অভিষেক হওয়া পেসার শরিফুল ইসলামের। ব্যক্তিগত ১১৮ রানের সময় লঙ্কান অধিনায়ক করুনারত্নেকে ফিরেয়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপী বোলার। আগামীকাল (শুক্রবার) ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে ১৩১ রানে ব্যাট করতে নামবেন লাহিরু থিরিমান্নে। আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান ওশাদা ফার্নান্দোর ব্যাট করবেন ৪০ রানে।
দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট নিষ্প্রাণ ড্র হওয়ার পর দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে দুই দল শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ। ক্যান্ডির পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আগের টেস্টের উইকেটে ঘাসের ছোঁয়া ছিল, এ ম্যাচে সেটাও দেখা গেল না। উইকেটের চরিত্র পড়তে ভুল করেননি স্বাগতিক দলের অধিনায়ক করুনারত্নে। টস জিতেই ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এরপর তার দল দিনভর শাসন করে সফরকারী বোলারদের।
পাল্লেকেলের প্রথম টেস্টের উইকেট গড়পড়তার থেকে নিম্নমানের বলে আখ্যায়িত করে খোদ আইসিসি। এরপরেও যেন বদলানো না দ্বিতীয় টেস্টের উইকেটের চরিত্র। কাজের কাজটা ঠিকই করেছেন শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। উইকেটের চরিত্র হোক বা নিজেদের দক্ষতা, ব্যাট হাতে ছড়ি ঘুরিয়েছেন তারা। বাংলাদেশি বোলারদের হতাশা উপহার দয়ে শতক তুলে নিয়েছেন দুই ওপেনার করুনারত্নে ও থিরিমান্নে।
বাংলাদেশি বোলারদের ব্যর্থতার মিছিলে একমাত্র অর্জন শরিফুলের। আগের ম্যাচের ডাবল সেঞ্চুরির পর এই ম্যাচের প্রথম ইনিংসেও সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে বিপদের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন করুনারত্নে। তাকে ফেরান অভিষিক্ত শরিফুল। দিনের শেষ মুহূর্তে আরেক সেঞ্চুরিয়ান থিরিমান্নের উইকেটও দখলে নিয়েছিলেন তিনি। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান থিরিমান্নে।
প্রথম সেশনে ধীরেসুস্থে ইনিংস শুরু করেন দুই ওপেনার করুনারত্নে ও থিরিমান্নে। প্রথম সেশনে স্কোর বোর্ডে ৬৬ রান জমা করেন তারা। প্রথম সেশনের মতো দ্বিতীয় সেশনেও কোনো উইকেট হারায়নি লঙ্কানরা। এই সেশনে ব্যক্তিগত শতক তুলে নেন করুনারত্নে। সাদা পোশাকের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটি তার ১২তম সেঞ্চুরি। পরে একই পথে হাঁটেন থিরিমান্নেও। তৃতীয় সেশনে করুনারত্নে আউট হওয়ার পর বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ও টেস্টে সব মিলিয়ে চতুর্থ শতকের দেখা পান।
করুনারত্নের সঙ্গে ২০৯ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙার পর ওশাদা ফার্নান্দোর সঙ্গে পার্টনারশিপ গড়েন থিরিমান্নে। পরে দলকে আর কোনো বিপদে পড়তে দেননি দুজন। অবিচ্ছেদ্য ৮২ রানের পার্টনারশিপে দিনের খেলা শেষ করেন তারা। যেখানে প্রথম দিনের ৯০ ওভারের খেলা শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ২৯১ রান। আগামীকাল ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে ১৩১ রানে ব্যাট করতে নামবেন থিরিমান্নে। আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান ফার্নান্দো ব্যাটিংয়ে নামবেন ৪০ রান নিয়ে।