খুলনার বাজারে সয়াবিনের উত্তাপের পর ফের পেঁয়াজের ঝাঁজ বাড়ছে। প্রতিকেজিতে ১০ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দু’দিন ধরে ব্যবসায়ীরা ৪০ টাকা দরে বিক্রি করছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটি। ক্রেতাদের অভিযোগ ব্যবসায়ীদের কারিসাজিতে বেড়েছে এর দাম। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন এলসি বন্ধ হওয়ার কারণে বেড়েছে এর দাম। এমনিতে ভোজ্য তেলের বাজার গরম, তারপর পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির খবর জেনে মধ্য আয়ের মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
নগরীর কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি পেঁয়াজ বর্তমানে ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন ৪০ টাকা। অথচ গত দু’দিন আগেও এ পণ্যটির দাম ছিল ৩০ টাকা। সরবরাহের ঘাটতির কথা বলে এর দাম বাড়ানো হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন।
নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ পাইকারী বাজারের ব্যবসায়ী মো: মালেক সরদার বলেন, বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি নেই। গত কয়েকদিন ধরে এলসি বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া ফরিদপুরের মোকামগুলোতে রয়েছে সংকট। যা আসছে তা বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। ঈদে ভাঙ্গা বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
একই বাজারের ব্যাপারী ফরহাদ হোসেন বলেন, ফরিদপুর, শালতা, নগরকান্দা, ঝাড়ৃদ্দা ও চাচড়া এলাকা থেকে পাইকারী এ বাজারে পেঁয়াজের আমদানি করা হয়। ঝাড়ূদ্দা বাজারে আজ পেঁয়াজের দর গেছে ৩১ টাকা ২৫ পয়সা। তাছাড়া প্রতিবস্তা পেঁয়াজ এ বাজারে আনতে তার আরও ৩ টাকার বেশী খরচ হয়। সেখানে দাম বেড়ে গেলে সবস্থানে দাম বেড়ে যাওয়াই স্বাভাবিক।
তিনি আরও বলেন, পেঁয়াজের গায়ের রস শুকিয়ে গেছে। সারা বছর ধরে এটি সংরক্ষণ করে রাখা যাবে। তাই কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় পেঁয়াজ মজুদ করে রাখছে। যার ফলে বাড়ছে এ পণ্যটির দাম। তাছাড়া দাম বৃদ্ধির জন্য তিনি আমদানি না হওয়াকেও কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
বড় বাজারের ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম বলেন, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ ঠিক আছে। মোকামগুলোতে আমদানিও স্বাভাবিক আছে। তবে বাজারে ভারতীয় এলসি পেঁয়াজ আমদানি কম হওয়ায় হওয়ায় এর দাম বেড়ে গেছে। গত দু’দিন আগে তিনি পাইকারী দরে প্রতিকেজি ২৫ টাকা দরে বিক্রি করলেও আজ তাকে ৩২ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
ময়লাপোতা সান্ধ্য বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তারা জানান, পাইকারী মোকামগুলোতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। তাদেরও অধিক দরে কিনে এটি বিক্রি করতে হচ্ছে। এ দরের নিচে বিক্রি করলে তাদের লস হবে বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
দুপুরে বড় বাজারের খুচরা দোকানে কথা হয় কাপড় ব্যবসায়ী আলামিনের সাথে। তিনি বলেন, তেলের বাজার এমনিতে গরম। তারপর আবারও পেঁয়াজের বাজরে ঝাঁজ শুরু হয়েছে। করোনা পরবর্তী সময়ে ব্যবসা ভাল হচ্ছেনা। এভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষের দাম বাড়তে থাকলে আমাদের মতো মানুষের কি উপায় হবে। আমরা তো কারও কাছে হাত পাততে পারবনা। এর দাম আর বাড়তে যেন না পারে সেজন্য এরসাথে জড়িত সংশ্লিষ্টদের জোরালো ভূমিকা পালনের জন্য অনুরোধ করেছেন তিনি।
সান্ধ্য বাজারে কথা হয় আইনজীবী ওমর ফারুকের সাথে। তিনি বলেন, যে অনুপাতে জিনিষের দাম বাড়ছে সে অনুপাতে তার আয় বাড়েনি। আয়ের সাথে ব্যয়ের কোন সংগতি খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে কেন? কাদের কারিসাজিতে মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে তা সরকারকে অনুসন্ধান করে জনসম্মুখে প্রকাশ করার জন্য আহবান জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/ টি আই