সড়কটি সংস্কার হয়েছে মাত্র কয়েক মাস আগেই। অথচ কিছু দিন যেতে না যেতেই গুরুত্বপূর্ণ সড়কের কার্পেটিং উঠে এখন খানাখন্দ আর কাঁদা মাটিতে একাকার। রাস্তাটি পথচারী এবং যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলে বেড়েছে জনদূর্ভোগ। ছোট-বড় যান চলাচলে ঘটছে দূর্ঘটনা। আর এজন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকেই দায়ী করছেন এলাকাবাসী ও চালকরা। একই সাথে সংশ্লিষ্টদের তদারকির এবং সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার বিপদের মোড়ে বসে থাকা ভ্যানচালক নবের আলী শেখের সাথে কথা হয় এ প্রতিনিধির। বয়সের ভারে নূয়ে পড়েছেন তিনি। তবুও জীবন-যাপনের জন্য এখনো ভ্যান চালাতে হচ্ছে এই সড়কেই। তিনি বলেন, এ উপজেলার অধিকাংশ সড়ক এখন যানবহন চলাচলের অনুপযোগী। মাত্র ৬ থেকে ৮ মাস আগে মেরামত করা রাস্তা গুলো এখন ভ্যান, নছিমন ও ট্রাক চালকদের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। অথচ প্রতি বছর সরকারের বাজেটের কোন ঘাটতি নেই। সংস্কারের জন্য উন্নয়ন ব্যয় করা হচ্ছে। কিন্তু তদারকির অভাবে রাস্তা-ঘাটের এমন করুণ অবস্থা। এখানে ঠিকাদারের লোকজন কাজ করার সময় ইঞ্জিনিয়ার অফিসের কর্মকর্তারাও ঠিকমত সাইডে আসে না।
বোয়ালিয়া গ্রামের ভ্যান চালক শান্তি রঞ্জন মন্ডল, বাবুগঞ্জের আক্কাস আলী, সুরশাইলের আকবর আলী, খিলিগাতী গ্রামের মিঠুন বাওয়ালী ও পাটরপাড়া গ্রামের জাহিদ আলী বলেন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের অনেক জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানি আটকে সেখানে মরণ ফাঁদের সৃষ্টি হয়। সেখান থেকে সবজি বোঝাই ট্রাক চরমভাবে দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে। কোথাও কোথাও ট্রাক আটকে পড়ায় ঘন্টার পর ঘন্টা সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ছে। ফলে ব্যাপারীদের রোষানলে পড়ে সবজির ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চাষীরা। অনেক সড়ক আবার সংষ্কারের অভাবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় গ্রামবাসীরা উৎপাদিত ফসল বাজারে নিতে হিমসিম খাচ্ছেন।
ফরিদপুরের ভাংগা এলাকার ট্রাক ড্রাইভার মোঃ মাসুদ বেপারী জানান, তিনি ১৩ বছর ধরে গাড়ী চালান। বহু খারাপ রাস্তা চলেছেন। কিন্তু চিতলমারী আসলে বুকের ভিতর কাঁপে। সর্বক্ষণ আতংকে থাকেন। কখন যেন গাড়ী ফেসে যায়। এই সমস্ত রাস্তা তাড়াতাড়ি সংস্কার হওয়া দরকার বলে তিনি দাবী করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কোন ঠিকাদার মন্তব্য করতে রাজি হননি।
চিতলমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নিজাম উদ্দিন শেখ জানান, তার এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তার কথা তিনি মাসিক আইন-শৃংখলা মিটিংয়ে তোলেন। কিন্তু তার কথায় কেউ সাড়া দেয়নি।
চিতলমারী উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ জাকারিয়া ইসলাম বলেন, যে সকল রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ তার অধিকাংশ সড়কে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় খাল পুনঃখনরের কাজে ব্যবহৃত দশ চাকার বড় গাড়ী চলাচলের জন্য হয়েছে। বাখরগঞ্জ থেকে গোদাড়া গেটের রাস্তাটি কয়েক স্থানে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া মধুমতী ও চিত্রা নদীর পাড়ে চিতলমারী থেকে বাবুগঞ্জ এবং চিতলমারী থেকে বাখরগঞ্জ সড়কে ফাটল ধরেছে। অফিসিয়ালভাবে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করেছি এবং জনদূর্ভোগ নিরসনের জন্য আমরা দ্রুত চেষ্টা করছি।
খুলনা গেজেট / সাগর / এমএম