দিঘলিয়ায় উদ্ধারকৃত ভারতের গবেষণা কাজে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো কচ্ছপটিকে রোববার সকালে বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে যান। এর আগে শনিবার দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাট এলাকা থেকে কচ্ছপটি উদ্ধার করে গাজীরহাট ক্যাম্প পুলিশ বনবিভাগকে খবর দেয়।
ভারতের গবেষণা কাজে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো বিলুপ্ত প্রজাতির বাটাগুরবাস্কা কচ্ছপ খুলনার দিঘলিয়া থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় এক জেলের জালে আটকে পড়ে এ কচ্ছপটি।
করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আজাদ কবির জানান, শনিবার খুলনার দিঘলিয়ার গাজীরহাটে জেলের জালে কচ্ছপটি ধরা পড়ার পর সেটি প্রথমে পুলিশ উদ্ধার করে। এরপর বনবিভাগের খুলনাঞ্চলের সিএফ মিহির কুমার খবর পেয়ে আমাদেরকে জানালে আমরা সেটি সেখান থেকে এনে করমজলে রেখেছি। পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
প্রজনন কেন্দ্রের বাটাগুরবাস্কা প্রজেক্টের স্টেশন ম্যানেজার আঃ রব জানান, মূলত বিলুপ্ত প্রজাতির এ বাটাগুরবাস্কা কচ্ছপের গতি ও আচরণবিধি, বিচরণ ক্ষেত্র, খাদ্যভাস এবং প্রজনন সম্পর্কে জানতে ভারতের টাইগার প্রজেক্ট গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সেদেশের সজনেখালী এলাকার কুলতলীতে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো ১০টি পুরুষ কচ্ছপ অবমুক্ত করে। ১১ দিনের মাথায় এর একটি নদী-সাগর পেরিয়ে এদেশের খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাটে চলে আসে।
ভারতের এ ধরণের আরও একটি কচ্ছপ পূর্ব সুন্দরবনের বলেশ্বর ও সাউথখালীর নদীতে বিচরণ করছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, এক সময়ে বাংলাদেশ, ভারত ও মায়ানমারে বাটাগুরবাস্কা প্রজাতির কচ্ছপের অস্তিত্ব ছিলো। এখন যা বিলুপ্ত প্রায়। এসব দেশের উপকূলীয় এলাকায় দুই একটির সামান্য অসস্থিত্ব রয়েছে। সেগুলো সংগ্রহ করেই এ গবেষণার কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিলুপ্ত প্রায় বাটাগুরবাস্কা প্রজাতির কচ্ছপ সংরক্ষণ, প্রজনন, গতি ও আচরণ বিধি, বিচরণ ক্ষেত্র, পানিতে ডুবে ও ভেসে থাকার সময় নির্ণয়সহ নানা কার্যক্রম জানতে বাংলাদেশ বনবিভাগ, অস্ট্রিয়ার ভিজুয়েনা, আমেরিকার টিএসএ ও ঢাকার প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন যৌথভাবে কাজ করছে।
পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে এ প্রকল্পের অবকাঠামোর কাজ শুরু হয়। ২০১৮, ১৯ ও ২০ সালে দফায় দফায় ১৫টি স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার সমৃদ্ধ কচ্ছপ সুন্দরবন ও সাগর মোহনায় অবমুক্ত করা হয়।
কচ্ছপের পিঠে বসানো স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটারের কার্যক্ষমতা এক বছরের। এরপর এমনিতেই এটি খসে পড়ে যায়। এক বছরেই এর তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে থাকেন অস্ট্রিয়ার ভিজুয়েনা ও আমেরিকার টিএসএ’র গবেষকেরা।
মোট ১৫টি নিয়ে কাজ শুরু হলেও এখন করমজলে এর সংখ্যা সাড়ে ৪শ’। সেই সাথে এ প্রজেক্টে ব্যাপক সফলতা এসেছে বলেও জানান প্রজেক্টের স্টেশন ম্যানেজার আঃ রব।
খুলনা গেজেট/এনএম