ঈদ উল আযহাকে সামনে রেখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোরবানীর পশুহাট, কেনা বেচায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখাসহ বিভিন্ন নির্দেশনা থাকলেও কেশবপুর শহরের পশু হাটে বেশির ভাগ ক্রেতা-বিক্রেতা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। অনেকেরই মুখে মাস্ক নেই। সামাজিক দূরত্বের কোন বালাই নেই । যেন করোনার সংক্রমণের কথা ভুলেই গেছেন সবাই।
কোরবানির ঈদ আর মাত্র কয়েকদিন বাকি, হাটে ক্রেতা-বিক্রেতারও ভিড় বাড়ছে। পশুর দাম তুলনামূলক কম থাকলেও বেচাকেনা তেমন নেই বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। সরকারি রাস্তা দখল করে পশু বেচাকেনা করা হচ্ছে। যে কারণে ওই সড়কের দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হওয়ায় পথচারীদের ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
জানা গেছে, কেশবপুর পৌর শহর, সরসকাটি, চিংড়া, বগা, মঙ্গলকোট, ভান্ডারখোলা, সাতবাড়িয়াসহ মোট কেশবপুরে মোট ৭ টি পশু হাট রয়েছে। কোরবানী ঈদকে সামনে রেখ এসব পশু হাটে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা গরু ক্রয়-বিক্রয় করতে আসেন। এ বছর করোনা ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করার কারনে উপজেলা প্রশাসন এসব পশু হাট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালানোর নির্দেশ প্রদান করলেও কোন হাটেই স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না ।
কেশবপুর শহরের পশুহাটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা-বিক্রেতাদের প্রচন্ড ভিড়। সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই। অনেকেরই মুখে মাস্ক নেই। হাতে গোনা দু-একজনের মাস্ক থাকলেও কথা বলার সুবিধার্থে মুখ থেকে তা নামিয়ে রেখেছেন গলায়। হাট কমিটির পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক তেমন কোনো প্রচারণা চোখে পড়েনি। হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নেই। স্যানিটাইজারের ব্যবহার হাটের কোথাও দেখা যায়নি। মাস্ক না পরার বিষয়ে জানতে চাইলে কয়েকজন তড়িঘড়ি করে পকেট থেকে মাস্ক বের করেন। এ ছাড়াও কেশবপুর- সাগরদাঁড়ি সড়কের উপর গরু বেচা কেনা করা হচ্ছে। যে কারনে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ওই সড়কে যাতায়াতকারি হাজারো মানুষদের ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
বরিশাল থেকে গরু কিনতে আসা শাহজাহান বলেন, ‘এ উপজেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট এটি। সপ্তাহে সোমবার ও বুধবার হাট বসে। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এই হাটে কেনাবেচা করতে আসেন। তাই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কোনো সুযোগ নেই।’
পার্শ্ববর্তী আটঘরা থেকে কেশবপুর শহরের পশু হাটে গরু বিক্রি করতে এসেছিলেন শওকত আলী (৪২)। তাঁর মুখে মাস্ক নেই। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, `পকেটে মাস্ক আছে। তবে অন্যান্যবারের তুলনাই এ বছর গরুর দাম ও বিক্রি কম ।’
মজিদপুর এলাকা থেকে গরু বিক্রি করতে আসেন নজরুল ইসলাম (৫০)। তাঁর মুখেও মাস্ক নেই। গরু টানাটানি করা নিয়েই ব্যন্ত। মুখে মাস্ক নেই কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে আমাদের কিছুই হবে না।’ পরে পকেট থেকে মাস্ক বের করে মুখে পরেন।
কেশবপুর পশু হাটের অন্যতম ইজারাদার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সবাইকে স্বাস্থ্যবিধির কথা বলা আছে। সার্বক্ষনিক মাইকিং করা হচ্ছে। কিন্তু মানুষ তা মানছে না। আসলে গ্রামের মানুষ সচেতন নয়।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত জাহান বলেন, ‘উপজেলার হাট ইজারাদারদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কোরবানির পশু বেচাকেনার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটা হাটে গিয়ে সবাইকে সচেতন করা হয়েছে। নির্দেশনা অমান্য করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে প্রয়োজনে হাট বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
খুলনা গেজেট/এনএম