খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  দুর্নীতি ও আমলাতন্ত্র দেশে ব্যবসায় পরিবেশ নিশ্চিতের অন্যতম বাধা : সিপিডি
  সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন ও তার স্বামীর পাসপোর্টের আবেদন স্থগিত
  দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্রেপ্তার

স্প্যানিশ দ্বীপে যাওয়ার পথে নৌকাডুবি, ৩৯ অভিবাসীর মৃত্যুর শঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের দিকে যাওয়ার সময় অভিবাসীদের বহনকারী একটি ডিঙ্গি নৌকা ডুবে গেছে। এতে ৩৯ অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বুধবার (২১ জুন) নৌকাডুবির এই ঘটনা ঘটে।

অভিবাসীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা অভিবাসন কেন্দ্রিক দু’টি সংস্থার বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (২২ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের দিকে যাত্রা করা একটি ডিঙ্গি নৌকা বুধবার ডুবে গেছে এবং এতে ৩০ জনেরও বেশি অভিবাসীর মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে বিপদাপন্ন যাত্রীদের উদ্ধারে আগে-ভাগে হস্তক্ষেপ না করার জন্য স্পেন এবং মরক্কোর সমালোচনা করেছে অভিবাসন কেন্দ্রিক ওই দুই সংস্থা।

রয়টার্স বলছে, ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের দিকে যাওয়ার সময় অভিবাসীদের বহনকারী নৌকা ডুবে যাওয়ার ঘটনাটি সামনে আনে ওয়াকিং বর্ডারস এবং অ্যালার্ম ফোন নামের দু’টি সংস্থা। অভিবাসীদের অধিকার রক্ষায় কাজ স্প্যানিশ ওয়াকিং বর্ডারস সংস্থাটি ক্যামিনাডো ফ্রন্টিরাস নামেও পরিচিত।

উভয় সংস্থাই জানিয়েছে, ডুবে যাওয়া ডিঙ্গি নৌকাটিতে মূলত ৬০ জন আরোহী ছিলেন। স্পেনের মেরিটাইম রেসকিউ সার্ভিস ডিঙ্গির দুই যাত্রীর – একজন শিশু এবং অন্যজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির – মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এবং বলেছে, মরক্কোর একটি টহল নৌকা এর আগে ২৪ জনকে উদ্ধার করেছে।

অবশ্য ডুবে যাওয়া নৌযানটিতে ঠিক কতজন লোক ছিল বা কতজন নিখোঁজ হয়ে থাকতে পারেন তা স্প্যানিশ বা মরক্কোর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করতে পারেনি।

ওয়াকিং বর্ডারসের মুখপাত্র হেলেনা ম্যালেনো এক টুইট বার্তায় বলেছেন, নৌকাডুবির পর ৩৯ জন সমুদ্রে ডুবে গেছে। তবে এই ঘটনার আরও বিশদ কোনও বিবরণ তিনি সামনে আনেননি। অন্যদিকে উদ্ধার অভিযানের সমর্থনে ট্রান্স-ইউরোপীয় নেটওয়ার্ক পরিচালনাকারী সংস্থা অ্যালার্ম ফোন বলেছে, ৩৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

রয়টার্স বলছে, অভিবাসীবাহী নৌকাডুবির সর্বশেষ এই ট্র্যাজেডিটি অভিবাসী অধিকার রক্ষায় কাজ করা কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এসব কর্মী মূলত স্পেনকে তার দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। কারণ ডিঙ্গি নৌকাটি যেখানে ডুবে গেছে সেটি আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে স্পেনের অনুসন্ধান ও উদ্ধার অঞ্চলের মধ্যে অবস্থিত। আর এর অর্থ হচ্ছে- মরক্কোর পরিবর্তে স্পেনের সেখানে উদ্ধার তৎপরতার নেতৃত্ব দেওয়া উচিত ছিল।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, ডুবে যাওয়ার সময় ডিঙ্গিটি পশ্চিম সাহারার উপকূলের পানিতে অবস্থান করছিল। যদিও মরক্কো সাবেক এই স্প্যানিশ উপনিবেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ পরিচালনা করে, তারপরও এটির সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিতর্ক রয়েছে এবং জাতিসংঘ এটিকে অ-স্বশাসিত অঞ্চল হিসাবে তালিকাভুক্তও করেছে।

স্পেনের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা ইএফই জানিয়েছে, গার্ডামার ক্যালিওপ নামে স্পেনের একটি উদ্ধারকারী জাহাজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই ডিঙ্গি থেকে মাত্র ৪৬ কিলোমিটার (২৬ মাইল) দূরে ছিল। যা সময়ের হিসেবে কার্যত এক ঘণ্টার দূরত্ব।

ইএফই আরও জানিয়েছে, কিন্তু এরপরও গার্ডামার ক্যালিওপ ওই ডিঙ্গিটিকে সাহায্য করেনি। কারণ মরোক্কান রেসকিউ কোঅর্ডিনেশন সেন্টার সেখানে উদ্ধার তৎপরতার দায়িত্ব নেয়। মরক্কো সেখানে মাত্র একটি টহল নৌকা পাঠায় এবং সেটিও প্রায় ১০ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

ওয়াকিং বর্ডারসের ম্যালেনো বলেন, ‘ছয়জন নারী ও একটি শিশুসহ ৬০ জন মানুষ ডুবে যেতে পারে এমন একটি ক্ষীণ ছোট নৌকাকে উদ্ধারের জন্য ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করিয়ে রাখা হয়।’

এ বিষয়ে জানতে রয়টার্সের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলেও মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনও সাড়া দেয়নি এবং এমনকি অভিবাসীদের সঙ্গে কী ঘটেছে সে সম্পর্কে জানতে আনুষ্ঠানিক কোনও যোগাযোগও করেনি মরক্কো।

অন্যদিকে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ অঞ্চলের নেতা অ্যাঞ্জেল ভিক্টর টরেস অভিবাসীদের মৃত্যুর জন্য টুইটারে শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইইউয়ের জন্য অভিবাসন এবং আশ্রয় বিষয়ক একটি চুক্তি থাকা প্রয়োজন।’

রয়টার্স বলছে, পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলে অবস্থিত ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ স্পেনে পৌঁছানোর চেষ্টাকারী অভিবাসীদের প্রধান গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের উপকূলে পৌঁছানোর প্রচেষ্টায় কমপক্ষে ৫৫৯ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ২২ জন শিশু।

সাধারণত সাব-সাহারান আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসীরা এই রুটটি ব্যবহার করে থাকেন।

খুলনা গেজেট/এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!