খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত, গুম কমিশনের সুপারিশে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে
  আইপিএল ইতিহাসে সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার ঋষভ পন্ত

স্ত্রীর সহযোগিতায় প্রতিবেশীর মেয়েকে ধর্ষণ, ছবি দেখিয়ে বন্ধুরা মিলে আবারও…

মাসুদুল হক, বাগেরহাট

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার দোবাড়িয়া এলাকায় স্ত্রীর সহযোগিতায় প্রতিবেশীর কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মোঃ মহিউদ্দিন হাওলাদার (৫০) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ধর্ষণের ছবি দেখিয়ে পরবর্তীতে খুলনার কোন এক বাসায় নিয়ে তিনজনে আবারও ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ ধর্ষণ ও নির্যাতনের ২০দিন পার হয়ে গেলেও কোন আইনি সহায়তা পায়নি পরিবারটি। উল্টো অভিযুক্তরা মামলা না করার জন্য হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন।

নির্যাতনের শিকার ১২ বছর বয়সী কিশোরির দিনমজুর বাবা বলেন, দোবারিয়া গ্রামের মোঃ মহিউদ্দিন হাওলাদার ও তার স্ত্রী সখী বেগম পেশাদার নারী পাচারকারী ও দেহ ব্যবসায়ী। বেশ কিছুদিন আগে সখি বেগম আমার মেয়েকে তার ঘরে ডেকে নেয়। তখন মোঃ মহিউদ্দিন হাওলাদার আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে। সখী বেগম ধর্ষনের ছবি তুলে রাখেন। লোক লজ্জার ভয়ে বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে, মেয়েকে খুলনার বড় মেয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেই। কিন্তু ১৩ আগস্ট বিকেলে বড় মেয়ের বাড়ি থেকে মেয়েকে ফুসলিয়ে নিয়ে যায় সখি বেগম ও কালাম সরদার। দুইদিন পরে ১৫ আগস্ট সকালে রুপসা ভ্যানস্টান্ডে অসুস্থ অবস্থায় আমার মেয়েকে ফেলে রেখে যায় তারা। মেয়ে সবকিছু খুলে বললে, আমরা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। ১৭ আগস্ট হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসি মেয়েকে। এরপর র‌্যাব-৬ খুলনা, রুপসা থানা ও কচুয়া থানায় একাধিক বার গেলেও মেয়ের নির্যাতনের কোন বিচার পাইনি।

নির্যাতনের শিকার কিশোরী বলেন, মহিউদ্দিন হাওলাদার ধর্ষণ করেছে এবং তার স্ত্রী সখি বেগম সেই ছবি তুলেছে। পরে আমাকে ভয় দেখিয়ে খুলনার একটি বাসায় নিয়ে রাতে মহিউদ্দিন হাওলাদার, বাস চালক কালাম সরদার ও ওই বাড়িতে থাকা আরও একজন পুরুষ আমাকে ধর্ষণ করে। তারা আমাকে জোর করে যৌন উত্তেজক ঔষধও খাইয়েছিল। আমি এর বিচার চাই।

দোবাড়িয়া এলাকার মোঃ সোলায়মান ফকির বলেন, কিশোরী মেয়েটার সাথে যে অন্যায় হয়েছে তার সঠিক বিচার চাই।

মোঃ রবিউল ফকির নামের এক ব্যক্তি বলেন, মোঃ মহিউদ্দিন হাওলাদার ও তার স্ত্রী সখি বেগম পেশাদার নারী পাচারকারী ও দেহ ব্যবসায়ী। এটা এলাকার সবাই জানেন। এই অপরাধে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা সখি বেগমকে কয়েকবার মারধরও করেছেন।

ফাতেমা বেগম নামের এক নারী বলেন, সখি ও মহিউদ্দিনের বিচার না হলে, এলাকার অন্য মানুষও ভয়ে থাকবে। আমরা তাদের বিচার চাই।

স্থানীয় মিতা বেগম বলেন, সখি তার বাড়িতে খারাপ মেয়ে এনে দেহ ব্যবসা করান। এই কাজে তার স্বামী সব ধরনের সহযোগিতা করেন। এলাকার কেউ যদি তাদের অপকর্মের প্রতিবাদ করে তাহলে তাদেরকে নানারকম হুমকি-ধামকি ও হয়রানি করে থাকেন এই স্বামী-স্ত্রী।

ইলমা বেগম বলেন, সখি ও তার স্বামী খুবই খারাপ মানুষ। এর সাথে যোগ দিয়েছে কালাম সরদার। আমরা এই কিশোরী মেয়েকে নির্যাতনকারীদের কঠোর বিচার চাই।

এদিকে ১৫ আগস্টের পরে পলাতক রয়েছেন মোঃ মহিউদ্দিন হাওলাদার ও তার স্ত্রী সখি বেগম। রবিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) সকালে মোঃ মহিউদ্দিন হাওলাদারের বাড়িতে গিয়ে তার ঘর তালাবদ্ধ দেখা যায়। কথা হয় পাশের ঘরে থাকা মহিউদ্দিনের মা মোমেনা বেগমের সাথে। তিনি বলেন, মহিউদ্দিন ও তার স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে খারাপ কাজ করেন। এজন্য তাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। তারা কোথায় গেছে আমি জানিনা।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহমুদ হাসান বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। শোনার পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত চলছে। অভিযুক্তদের আটক করতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।

খুলনা গেজেট/এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!