যশোরে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে মারপিট ও মাথার চুল কেটে দিয়েছে এক স্বামী। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আদালতে মামলা দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই নারী। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরে স্বামী, দেবর ও শাশুড়ির নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে তিনি মামলা করেছেন। আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের জন্য বাঘারপাড়া থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই নারীর আইনজীবী।
মামলায় অভিযুক্তরা হলো, মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে তরিকুল ইসলাম, দেবর তৗহিদুল ইসলাম ও শাশুড়ি হাফিজা খাতুন।
আদালতে দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ১৫ মে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার সিলুমপুর গ্রামের ওই নারীর সাথে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে তরিকুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় স্বর্ণালঙ্কারসহ ২ লাখ টাকার মালামাল উপহার হিসেবে দেয়া হয়। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ব্যবসার জন্য শ্বশুর বাড়িতে আরো তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে তরিকুল ইসলাম। এ টাকা ওই নারী তার পিতার বাড়ি থেকে এনে দিতে রাজি না হওয়ায় তরিকুল ইসলাম, তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম ও মা হাফিজা খাতুন তার উপর নির্যাতন শুরু করে। কিন্তু তিনি নির্যাতন সহ্য করে সংসারে টিকে থাকার চেষ্টা করেন। সর্বশেষ গত ২৭ জুন একমাত্র ছেলে সন্তানকেসহ আনোয়ারা খাতুনকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। এরপর তিনি তার পিতার বাড়িতে আশ্রয় নেন। বিষয়টি তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে স্বামীর সাথে মীমাংশার চেষ্টা চালান। সর্বশেষ গত ১৬ জুলাই আনোয়ারা খাতুনের পিতার বাড়িতে মীমাংশায় বসে দুই পরিবারের সদস্যরা। এরপর তাকে ও তার সন্তানকে নিয়ে মাইক্রোবাসাযোগে মেহেরপুরের উদ্দেশে রওয়ানা হন তরিকুল ইসলাম, তার ভাই ও মা। পথিমধ্যে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার রায়পুরের বিপুল ফারাজির ইটভাটার সামনে পৌছুলে হতভাগ্য নারীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারপিট এবং তার মাথার চুল কেটে দেয়া হয়। এসময় তার চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে তার ছেলেকে গাড়ি থেকে নামিয়ে তরিকুল ইসলাম ও তার স্বজনরা চলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সুস্থ হয়ে বাঘারপাড়া থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ টালবাহানা শুরু করে ও পরে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। যে কারণে তিনি মঙ্গলবার আদালতে এ মামলা দায়ের করে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন।
ভুক্তভোগী ওই নারীর আইনজীবী মোস্তাফা হুমায়ুন কবির জানান, আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের জন্য বাঘারপাড়া থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/কেডি