খুলনা রেলস্টেশনের ডিজিটাল স্ক্রিনে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বার্তা প্রচারের ঘটনা তদন্তে রেলওয়ের পশ্চিম জোনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা খুলনা এসেছেন। আজ রোববার বেলা একটায় সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেসে করে খুলনা রেল স্টেশনে পৌঁছান। তারা উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি।
রেলস্টেশনের ডিজিটাল স্ক্রিনে বার্তা প্রচারের ঘটনায় ৪ সদস্য তদন্ত কমিটির প্রধান হলেন, পশ্চিম জোনের বিভাগীয় ট্রান্সপোর্ট অফিসার হাসিনা খাতুন। এছাড়া অন্যান্য সদস্যরা হলেন, বিভাগীয় বাণিজ্যিক অফিসার গৌতম কুমার কুন্ডু, বিভাগীয় বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী রিফাত শেখ ও বিভাগীয় সংকেত টেলিযোগাযোগ অফিসার সৌমিক কবীর শাওন।
তদন্ত কমিটির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা রেলওয়ে স্টেশন মাষ্টার মাসুদ রানা। তিনি খুলনা গেজেটকে বলেন, শনিবার রাতে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। রোববার দুপুরে তারা সাগরদাড়ি এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেনে খুলনায় পৌছান। তারা তদন্ত করছেন।
তিনি বলেন, খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে দু’টি ডিজিটাল স্ক্রিন রয়েছে। স্ক্রিন বোর্ডটি নিয়ন্ত্রণ করেন ত্রিপলী সাইন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী আসলাম হোসেন সেন্টু। গত ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় একটি স্ক্রিন চলছিল এবং অপরটিতে হ্যাকড লেখা ছিল। তিনি সাথে সাথে বিষয়টি সেন্টুকে অবগত করেন। সেন্টু রাত ১০ টার দিকে এসে বিষয়টি সমাধান করেন। শনিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করে ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়কর রূপে ফিরবে, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা আবার আসবে’ এমন একটি বার্ত ডিজিটাল স্ক্রিনে ভেসে উঠলে তিনি সাথে সাথে সুইচ বন্ধ করে দেন। এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রেলস্টেশনের অবস্থান নেয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মী, সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনতা। এ সময় তাদেরকে নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়। এরপর তিনি ফোন দিলে ২০ মিনিট পর সেন্টু ঘটনাস্থলে আসেন। সেন্টু উপস্থিত জনতা ও সাংবাদিকদের কাছে বলেন, এর পাসওয়ার্ড ও ডিজিটাল স্ক্রিন তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন। এসময়ে সেন্টুকে আটক করে পুলিশে সোপার্দ করা হয়।
স্টেশন মাষ্টার মাসুদ রানা আরও জানান, এর আগে ঢাকায় এমন ঘটনা ঘটেছিল। শনিবারের ঘটনার পর থেকে রাজশাহী ও খুলনার ডিজিটাল স্কিন বোর্ড বন্ধ রাখা হয়েছে।
রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ ফেরদৌস আলম খান বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মো: নাবিল খান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করবেন। তিনি মামলায় স্টেশনের তিনজন স্টাফের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনাম আরও অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করবেন। তারা হলেন, রনি, স্নিগ্ধা ও অপু। তারা সকলে স্টেশনের ষ্টাফ। তিনি বলেন এ ঘটনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র নেতারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আলোচনায় রয়েছেন। জেলা প্রশাসক অনুমতি দিলে মামলা রুজু হবে বলে তিনি আরও জানান।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় খুলনা রেলস্টেশনের ডিজিটাল স্ক্রিনে ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা আবার আসবে’ এমন একটি লেখা দেখা যায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে খুলনা মহানগর বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা এসে স্টেশন ভবনে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহ মো. আসলাম হোসেন সেন্টু নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেন।
খুলনা গেজেট/এইচ/এনএম