হ্যারি কেইনের মতো তারকা যখন দলে থাকেন, তখন পাদপ্রদীপের আলোটা কেড়ে নেওয়া কঠিনই হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু রাহিম স্টার্লিং যে সেই কঠিনেরেই বেসেছিলেন ভালো! ইউরো ২০২০-এ ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের প্রথম ম্যাচে জয়ের নায়ক স্পটলাইট কেড়ে নিলেন তৃতীয় ম্যাচেও। তার একমাত্র গোলে ভর করেই যে চেক প্রজাতন্ত্রকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় জায়গা করে নিয়েছে কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা!
প্যান ইউরোপিয়ান এই টুর্নামেন্টে অন্তত গ্রুপপর্বে স্বাগতিক হওয়ার সুবিধেটা পেয়েছিল ইংলিশরা। শেষ ষোলতেও একই সুযোগ পেতে হলে হতে হতো গ্রুপসেরা। ‘ডি’ গ্রুপ থেকে শেষ ষোল নিশ্চিত হয়ে গেলেও তাই গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ দিনে কিছু হিসেব মেলাতে হতো ইংলিশদের। চেকদের কাছে হেরে গেলে, দিনের অন্য ম্যাচে ক্রোয়েশিয়া বড় ব্যবধানে জিতে গেলে সে হিসেবে গড়বড় হয়ে যেত কেইনদের, চেকদের হারিয়ে সেটা অবশ্য হতে দেয়নি শিরোপাপ্রত্যাশীরা।
ইতিহাস অবশ্য কথা বলছিল ইংলিশদেরই পক্ষে। বছর দুই আগে ইউরোর বাছাইয়ে এই ওয়েম্বলিতেই যে চেক রিপাবলিককে তারা হারিয়েছিল ৫-০ ব্যবধানে! সেদিনও অবশ্য নায়ক ছিলেন এই স্টার্লিংই। হ্যাটট্রিক করেছিলেন তিনি, দল পেয়েছিল বড় জয়। তবু ইউরোর গ্রুপপর্বের এই ম্যাচে কিছুটা শঙ্কা তো ছিলই, বড় টুর্নামেন্ট বলে কথা। সে শঙ্কাকে শেষমেশ উড়িয়েই দিয়েছে দলটি। শেষ ম্যাচে চেকদের বিপক্ষে তুলে নিয়েছে ১-০ গোলের জয়। তাতে তিন ম্যাচে ৭ পয়েন্ট ঝুলিতে পুরেছে থ্রি লায়ন্সরা।
আর অন্য ম্যাচে ক্রোয়েশিয়া স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়েই নিশ্চিত করেছে শেষ ষোল। তিনে থাকা চেকদের সঙ্গেও অবশ্য গোল ব্যবধান আর মুখোমুখি লড়াইয়ে সমতায় ছিল ক্রোয়াটরা, তবে তারা দ্বিতীয় হয়ে শেষ ষোলয় গিয়েছে বেশি গোল করার সুবাদে।
দ্বিতীয় মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলেন স্টার্লিং। কিন্তু গোলপোস্ট বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তার আর ইংল্যান্ডের পথে। এরপর ১২ মিনিটে অবশ্য যে সুযোগটা তাকে গড়ে দিয়েছেন জ্যাক গ্রেলিশ, সেটায় গোল করার চেয়ে মিস করাই ছিল বেশি কঠিন। স্টার্লিং অবশ্য সে পথে হাঁটেননি। গোল করেছেন, দলকে দিয়েছেন এগিয়ে।
এরপর হ্যারি কেইনের একটা চেষ্টা রুখে দিয়ে চেকদের ম্যাচে রাখেন গোলরক্ষক থমাস ভাচলিক। এর একটু পরেই ও প্রান্তে ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডকেও দিতে হয় পরীক্ষা। থমাস হোলসের বক্সের বাইরে থেকে করা শটটি সেভ দেন তিনি। এর কিছু পরে থমাস সুচেকের শটটা বেরিয়ে যায় লক্ষ্যের একটু বাইরে দিয়ে। ফলে এক গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ইংল্যান্ড।
বিরতি থেকে ফেরার পর ইংলিশরা মনোযোগ দিয়েছে রক্ষণে। ফলে এটাই হয়ে যায় শেষ বাঁশি বাজার সময়ের ব্যবধান।
ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচটা অবশ্য এতটা জলবৎ তরলং ছিল না। বরং এক পর্যায়ে সমতা ফিরিয়ে ক্রোয়েশিয়াকে ভয়ই পাইয়ে দিয়েছিল পুঁচকে স্কটল্যান্ড। বিরতির পর লুকা মদ্রিচ, আর ইভান পেরিসিচের গোলে ৩-১ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে।
এর ফলে গ্রুপ রানার্স আপ হয়ে ক্রোয়েশিয়া চলে যায় শেষ ষোলয়। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ কে, তা অবশ্য এখনো ঠিক হয়নি।
খুলনা গেজেট/ টি আই