দীর্ঘ বিরতির পর ঢাকা ডার্বির ম্যাচ দিয়ে মাঠে নেমেছে ঢাকা আবাহনী ও মোহামেডান। পুরনো ঐতিহ্যের ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে বড় দ্বৈরথ যুগে যুগে জৌলুশ হারালেও মাঠের উত্তেজনায় কমতি নেই। রোববার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে যেন সেয়ানে সেয়ানে টক্কর দিল দুই দল।
ম্যাচ শেষে ১-১ ব্যবধান পয়েন্ট ভাগাভাগির স্বস্তি। তবে, হাইভোল্টেজ ম্যাচের বিজয়ী নিঃসন্দেহে ‘ফুটবল’। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের প্রথম লেগে কুমিল্লার মাটিতে প্রথম ডার্বির ম্যাচটা ২-২ ব্যবধানে ড্রয়ে শেষ হয়। চলতি লিগের শেষ ডার্বিতে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ভরপুর একটা রোমাঞ্চ ছিল মাঠে।
করোনা-ইনজুরিতে মাঠের বেহালের মধ্যেও উত্তেজনাকর ম্যাচ দেখেছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম।
ম্যাচের শুরু থেকে সমানে সমান টক্কর দিয়ে গেছে দুই দল। প্রতি সেকেন্ডেই আক্রমণের চেহারা বদলেছে। ম্যাচের ২০ মিনিটে সাইড পোস্ট কপাল পোড়ায় মোহামেডানের। সলোমন দিয়াবাতের পাস পেয়ে ডি-বক্সের ভেতর থেকে জোরালো শট নেন ইয়াসিন আওচিং। সাইড পোস্টে লেগে ফিরে আসায় লিড না পাওয়ার দুঃখে ভাসে সাদা-কালো জার্সিধারীরা।
দশ মিনিট বাদে সেই আক্ষেপ অবশ্য মিটিয়েছেন ইয়াসান। ৩০ মিনিটে নিজেদের অর্ধ থেকে সোলেমান দিয়াবাতের দিকে হেড করেছিলেন মৌনজির কৌলিদিয়াতি। সোলেমান বল পায়ে রাখেননি, বাড়িয়ে দেন ইয়াসানের কাছে। আবাহনী গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেলকে একা পেয়ে এবার আর সুযোগ হাতছাড়া করেননি ইয়াসান।
পিছিয়ে পড়ে থামেনি আবাহনীর আক্রমণ। মিনিট তিনেক বাদেই ম্যাচে দারুণ সুযোগ তৈরি করে আবাহনী। কিন্তু মোহামেডানের ডি-বক্সের মধ্যে গোলকিপারকে একা পেয়েও বল স্পর্শ করতে পারেনি বেলফোর্ট।
একের পর এক আক্রমণে শেষ পর্যন্ত ৪১ মিনিটে সমতার স্বস্তিতে ফেরে আবাহনী। ডি-বক্সের বাইরে থেকে আবাহনীর ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার রাফায়েল আগুস্তোর শট মোহামেডান অধিনায়ক উরুও নাগাতার গায়ে লেগে বল পান কেভিন বেলফোর্ট। মোহামেডান গোলরক্ষক সুজন এগিয়ে আসার সময় বুদ্ধিদীপ্ত চিপ শটে জাল খুঁজে নেন এই হাইতিয়ান।
১-১ গোলের সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় ডার্বি। দ্বিতীয়ার্ধেও একই চিত্র। শুরুতেই কর্নার আদায় করে নেয় মোহামেডান। সেই কর্নার নিয়েই দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। ডার্বি হবে শারীরিক উত্তেজনা হবে না তা কি হয়!
জায়গা দখল নিয়ে শুরুতে মোহামেডান অধিনায়ক উরু নাগাতাকে হালকা ধাক্কা দেন আবাহনীর ডিফেন্ডার ফলে মাটিতে পড়ে যান তিনি। এরপর রেফারি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করলেও এরপরেই সাদা-কালো খেলোয়াড়ের স্পর্শে মাটিতে পড়ে যান আবাহনীর গোলকিপার সোহেল।
ম্যাচের ৫৫ মিনিটে গোল পোস্টের কাছে আত্মসমর্থন করতে হয় আবাহনীকে। অভিজ্ঞ মামুনুলের নেওয়া কর্নার কিক অলিম্পিক গোল হতে হতে যেন হয়নি। মোহামেডান গোলকিপারের হাতে লেগে সাইড বারে লেগে ফিরে আসলে গোল থেকে বঞ্চিত হয় আবাহনী।
দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলের মধ্যে সবচেয়ে বড় সুযোগটা পান আবাহনীর মামুনুল। ডি-বক্সের বাইরে পাওয়া বলটা গোলকিপারকে একা পেয়েও চিপ করতে ব্যর্থ হওয়ায় লিড নেয়ায় হতাশ হয় আবাহনী।
শেষ পর্যন্ত এই ব্যবধানেই পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়ে দুই দল। এ ড্রয়ে ক্ষতি দুই দলেরই হয়েছে। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা কিংসের সঙ্গে ব্যবধান আরও বাড়ল আবাহনীর।
কিংসের থেকে ১৩ পয়েন্ট কম নিয়ে ৩৩ পয়েন্ট ঝুলিতে রেখে দুইয়ে আবাহনী। আর ২৯ পয়েন্ট নিয়ে চারে উঠে এলো মোহামেডান।
খুলনা গেজেট/ টি আই