খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ কার্তিক, ১৪৩১ | ২২ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে রাজশাহীর সারদায় পুলিশের ২৫০ এসআইকে অব্যাহতি
  নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতে আপিল পুনরুজ্জীবিত করলেন আপিল বিভাগ, এ আদেশের ফলে জামায়াতের আইন লড়াইয়ের পথ খুলে গেল

সূর্যমুখী চাষে আগ্রহ বাড়‌ছে কৃষক‌দের

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনার রূপসায় গতবছরের মতো এবারও সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। ফুলে ফুলে ভরে গেছে সূর্যমুখী ক্ষেত। ব্যাপক চাহিদার বিপরীতে কম খরচে অধিক লাভবান হওয়ায় দিন দিন সূর্যমুখী চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে এই উপজেলায়। এরই মধ্যে সূর্যমুখীর হাসিতে ভাল ফলনের স্বপ্ন দেখছে কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ২০ জন কৃষক প্রায় আড়াই হেক্টর জমিতে (হাইসান-৩৩) জাতের সূর্যমুখীর আবাদ করা হয়েছে। সূর্যমুখী চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন কৃষকরা। ফলে মিটবে সূর্যমুখী তেলের চাহিদা।

১নং আইচগাতী ইউনিয়নের দূর্জ্জনীমহল এলাকার কৃষক ফোয়াদ মোল্লা। তিনি সূর্যমুখী চাষ করেছেন। তিনি জানান, আমি প্রথমবারের মতো ১৩ শতক জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। আমি প্রায় ৪ মাস আগে জমিতে সূর্যমুখীর চারা লাগিয়েছি। ১৫-২০ দিন পর এই ফসল কাঁটতে পারবো। এই ফসল চাষে প্রচুর খরচ। আমার জমিতে ২৫শ’ চারা আছে। আশা করছি এই ফসল চাষে আমি অধিক লাভবান হতে পারবো।

রূপসা উপজেলার দূর্জ্জনীমহল ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো: রাজু আহমেদ বলেন, আমার ব্লকে যে সব কৃষক সূর্যমুখী ফসল চাষ করছে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাদেরকে সকল ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে। এমনকি আমি এই ব্লকের দায়িত্বে থাকার সুবাদে তাদের ফসলের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। সূর্যমুখী লাভজনক ফসল। তাই কিভাবে ফলন ভালো হয় সে ব্যাপারে কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক তদারকি করছে।

রূপসা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ফরিদুজ্জামান বলেন, এ বছর উপজেলায় প্রায় আড়াই হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। সূর্যমুখীর তেল খুবই ভালো। এই উপজেলার দূর্জনীমহল ও নন্দনপুর এলাকায় সূর্যমুখীর চাষ বেশি হয়ে থাকে। গত বছর ২ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছিল। এবার আরো বেশি জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। এই ফসল চাষে কৃষকরাও আগ্রহী হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাদেরকে বিনামূল্য বীজ-সার দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রতি বিঘায় ৭-৮ মন ফলন পাওয়া যাবে। সূর্যমুখী চাষে খরচ তেমন একটা বেশি না। ভালো জাতের বীজ কিনলে দামটা একটু বেশি পরে। এই ফসল চাষে বাড়তি কোন খরচ করতে হয় না। শুধু জমিতে হালকা সেচের দরকার হয়। নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে জমিতে এই ফসল লাগাতে হয়। উপজেলায় প্রায় ২০ জন কৃষক সূর্যমুখী চাষ করেছে। ফলনও ভালো পেয়েছে।

খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, সূর্যমুখী আমাদের একটা নতুন ফসল। সূর্যমুখী একটি লবণ সহিষ্ণু ফসল। তেল জাতীয় যত ফসল আছে। তার ভিতর সূর্যমুখী সবচেয়ে ভালো তেল। ক্ষতিকারক ইরোসিক এসিডমুক্ত এবং স্বাস্থ্যসম্মত ভোজ্য তেলের জন্য সূর্যমুখীর তেল খুবই উপযুক্ত। বর্তমান বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই কৃষি প্রণোদনা, কৃষি পুনর্বাসন এবং প্রদর্শনী প্রকল্পের মাধ্যমে সূর্যমুখী চাষে স্থানীয় কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এ বছর জেলায় টার্গেট ছিল ২৫০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হবে। তবে হয়নি, কারণ এই ফসল চাষ করতে আমরা যে সব জায়গা নির্ধারণ করে ছিলাম। সেসব জায়গায় প্রচুর পরিমাণে তরমুজ চাষ হয়েছে। যে কারনে ১৯৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সব ফসলের মতো এই ফসল দোঁয়াশ মাটিতে ভালো হয়। তবে খুলনায় হচ্ছে কর্দম মাটি। এই মাটিতে ফসল একদম খারাপ হচ্ছেনা। খুব সহজে কৃষকেরা যাতে এই ফসল চাষ করতে পারে সেজন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের গবেষণা করছি। তবে এই ফসলের একটি সমস্যা হল, যখন বীজ ভাঙ্গানো হয়। তখন ওই তেল কিছু সময়ের ভিতর গন্ধ হয়ে যায়। তবে প্রসেসিং করলে তেল থেকে গন্ধ বের হয় না।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!