বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আয়োজনে ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় ‘নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আইন, বিধি ও প্রবিধিমালার প্রয়োগ’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার(৩১ জুলাই) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।
তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্যের বিষয়টি উৎপাদন, পরিবহন, বিপনন, প্রক্রিয়াজাতকরণ থেকে শুরু করে খাবার টেবিল পর্যন্ত বিস্তৃত। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও ব্যবস্থা অবলম্বন করা দরকার। তবে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন জনসচেতনতা, পাশাপাশি আইন, বিধিবিধান প্রয়োগ, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা এবং সর্বোপরি রাজনৈতিক ও সামাজিক কমিটমেন্ট।
তিনি নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে পরিবার থেকে শিক্ষালাভ করা, অভ্যাস করা ও সচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরের পাঠ্যবইতে এ বিষয়ে পাঠ্যসূচি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে উপাচার্য বলেন, তিনি অনেক আগেই নিরাপদ খাদ্যের গুরুত্ব উপলব্ধি করে সংসদে আইন পাস করে একটি কর্তৃপক্ষ করে দিয়েছেন। নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা কার্যকর করা গেলে সুস্থ জাতি গঠন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য সুস্থ দেহ, সুস্থ জাতি- এই বিষয়গুলো সামনে রেখে আসুন আমরা সবাই সচেতন হই।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের খাদ্যভোগ ও ভোক্তা অধিকার সদস্য (যুগ্ম সচিব) মোঃ রেজাউল করিম।
সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন খুলনার নিরাপদ খাদ্য অফিসার সুরাইয়া সাইদুন নাহার।
পরে এ বিষয়ে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। মূল নিবন্ধে নিরাপদ খাদ্যের গুরুত্ব, বর্তমান অবস্থা ও দায়িত্ব পালনকারী সংস্থাসহ নানাবিধ প্রতিকূলতা তুলে ধরা হয়।
বলা হয়, নিরাপদ খাদ্য বা খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনার সাথে সরকারের ১৮টি সংস্থা রয়েছে। সমন্বয়ের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনে কাজ করা জরুরি। প্রতিদিন দেশে জনসংখ্যার হিসেবে মাথাপিছু খাবারের ১৫০ টাকা হিসেবে ২৪০০ টাকা দরকার হয়। দেশে ১৫ লাখ হোটেল-রেস্তোরাঁ রয়েছে। আমাদের সার্বিক স্বাস্থ্যের অবস্থা যে ভালো নেই তা স্বাস্থ্যখাতে ব্যয়বৃদ্ধি ও হাজার হাজার ক্লিনিক-হাসপাতাল ও ওষুধের দোকান বৃদ্ধির দিকে তাকালেই বোঝা যায়। নিবন্ধে চিকিৎসাখাতের এই ব্যয়বৃদ্ধির বিপরীতে জনস্বাস্থ্য এবং বিশেষ করে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে পারলে রোগীর সংখ্যা হ্রাস পাবে বলে উল্লেখ করা হয়।
সেমিনারে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।