বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের রহস্যজনক মৃত্যুর পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছিল মাদকের বেড়াজাল। এর প্রমাণ পেয়ে তার প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তীর ভাই শৌবিক চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করেছে ভারতের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো (এনসিবি)। একইসঙ্গে প্রয়াত তারকার বাড়ির ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডা গ্রেফতার হয়েছেন। শনিবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
মাদকবিরোধী আইনের আওতায় ১০ ঘণ্টার দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে শৌবিক ও স্যামুয়েলকে গ্রেফতার করেছে এনসিবি। এর আগে শুক্রবার সকালে তাদের পৃথক বাড়িতে তল্লাশি চালায় জানিয়েছে। রিয়া ও শৌবিক একই বাড়িতে থাকেন। রিয়ার ভাইয়ের ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
সুশান্তের অপমৃত্যুর মামলায় সংশ্লিষ্টতার কারণে শুক্রবার আব্দুল বাসিত পরিহার ও কাইজান ইব্রাহিম নামের দুই মাদক সরবরাহকারীকে গ্রেফতার করেছে এনসিবি। একই মামলায় বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হওয়া মাদক ব্যবসায়ী জাইদ বিলাত্রা দাবি করেন, নগদ টাকা দিয়ে মাদক কিনতেন শৌবিক। এছাড়া গত ২৭ ও ২৮ আগস্ট গ্রেফতার হয় আব্বাস লাখানি ও করণ অরোরা। সব মিলিয়ে গ্রেফতার ব্যক্তির সংখ্যা সাত।
মুম্বাইয়ের একটি আদালতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো জানিয়েছে, মাদক ব্যবসায়ী আব্দুল বাসিত পরিহারের কাছ থেকে নিয়মিত গাঁজা কিনতেন শৌবিক। গুগল পে’র মাধ্যমে বেচাকেনার অর্থ পরিশোধ হতো। রিয়ার জোরাজুরিতে স্যামুয়েল মিরান্ডাকে দিয়ে তিনি মাদক কেনাতেন বলে স্বীকার করেছেন।
মেসেজ আদান-প্রদানের একটি অ্যাপে গত ১৭ মার্চ মিরান্ডাকে বিলাত্রার নম্বর জানিয়ে ৫ গ্রাম মাদকের জন্য ১০ হাজার রুপি দিতে বলেন শৌবিক। বিলাত্রার কাছ থেকে ৯ রাখ ৫৫ হাজার ৭৫০ রুপি, ২ হাজার ৮১ মার্কিন ডলার, ১৮০ ব্রিটিশ পাউন্ড ও ১৫ দিরহাম উদ্ধার করেছে এনসিবি।
গত ১৪ জুন মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় নিজের ফ্ল্যাটে সুশান্ত সিং রাজপুতের লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আত্মহত্যা বললেও তার বাবা কেকে সিং মানতে না পেরে একটি মামলা করেন। এরপর ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিবিআই) এবং অর্থনৈতিক আইন-কানুন প্রয়োগ ও আর্থিক অপরাধ দমনসংক্রান্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) পর এনসিবি তৃতীয় সংস্থা হিসেবে তদন্ত করেছে।
ইডি মাদকের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি উল্লেখ করার পর গত ২৬ আগস্ট রিয়া চক্রবর্তী, তার ভাই শৌবিক চক্রবর্তী, রিয়ার ট্যালেন্ট ম্যানেজার জয়া সাহা, সুশান্তের সহ-ব্যবস্থাপক শ্রুতি মোদি ও গোয়ার হোটেল ব্যবসায়ী গৌরব আর্যের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনের বিভিন্ন ধারায় একটি মামলা করে এনসিবি। এছাড়া মাদক ষড়যন্ত্রের কারণে রিয়ার বিরুদ্ধে অপরাধ মামলা করে সংস্থাটি। রিয়া ও শ্রুতি মোদি, স্যামুয়েল মিরান্ডা ও সুশান্তের ফ্ল্যাটসঙ্গী সিদ্ধার্থ পিথানির মধ্যকার হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ দেখে বিষয়টি সামনে আসে। (তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, বলিউড হাঙ্গামা)