খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ পৌষ, ১৪৩১ | ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’ আজ

সুপ্ত অবস্থায় সুন্দরবনের আগুন, পুড়েছে প্রায় ১০ একর বনভূমি

মাসুদুল হক, বাগেরহাট

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি এলাকার আগুন এখনও সম্পূর্ণ রুপে নেভেনি । সুপ্ত অবস্থায় রয়েছে আগুন। থেমে থেমে জ্বলে উঠছে বিভিন্ন জায়গা থেকে। ধোয়াও বের হচ্ছে পৃথক পৃথক স্থান থেকে। কখন সম্পূর্ণ রুপে এই আগুন নেভাতে পারবে তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (০৬ মে) বিকেল ৫টায় আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিতদের কাছ থেকে এসব তথ্য জানা যায়। এর আগে বুধবার (০৫ মে) সকালে দাসের ভারানি এলাকায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এর মাত্র দুই দিন আগে সোমবার (০৩ মে) দুপুরে ওই এলাকার উত্তর পাশে আগুন লেগেছিল। তখন দুই দিনের চেষ্টায় মঙ্গলবার বিকেলে আগুন নেভাতে সক্ষম হলেও পরের দিন (বুধবার) সকাল সাড়ে ১০টায় আবারও আগুন লাগায় হতবাক হয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। দুই বারের এই অগ্নিকান্ডে সুন্দরবনের দাসের ভারানি এলাকার অন্তত ১০ একর বন ভূমি পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের সাথে আগুন নেভাতে বনের মধ্যে যাওয়া আফজাল হাওলাদার, খলিল মাঝি, নজরুল ইসলামসহ কয়েকজন বলেন, সোমবার থেকে আজ পর্যন্ত চারদিন-ই আমরা বনে এসেছি। বনের মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগের সাথে আগুন নেভাতে কাজ করেছি। চোখের দেখায় মনে হয় ১০ একরের বেশি বনভূমি পুড়েছে সর্বগ্রাসি এই আগুনে। এখনও আগুনে পুড়ছে আমাদের বন। কখন নিভবে জানি না। তবে আল্লাহ যদি রহমতের বৃষ্টি দেয় তাহলে সহজে আগুন নিভে যেত।

বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারি পরিচালক মোঃ গোলাম সরোয়ার বলেন, বুধবার (০৫ মে) সকালে সুন্দরবনের দাসের ভারানি এলাকায় আগুনের খবর পেয়ে আমাদের তিনটি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করেছি। বৃহস্পতিবার বিকেলে পাঁচটা পর্যন্ত আমরা আগুন নেভানোর জন্য পানি দিয়েছি। কিন্তু সুন্দরবনে শুকনো পাতার পুরু স্তর ও দূর্গম হওয়ায় আগুন নেভাতে আমাদের খুব বেগ পেতে হচ্ছে। অগ্নিকান্ডের স্থান থেকে পানির উৎস অনেক দূরে। এখনও নিভে নিভে আগুন জ্বলছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে মাঝে মাঝে আগুন জ্বলে উঠছে। আজকের মত আমরা অভিযান সমাপ্ত করেছি। এবংবনের ভিতর গর্তকরে পলিথিন দিয়ে পানির রিজার্ভ করা হয়েছে।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক জয়নাল আবেদিন বলেন, চার দিনের মধ্যে সুন্দরবনের দুইবারের আগুন নেভাতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। বন বিভাগের শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাথে শতাধিক এলাকাবাসী, সিপিজি সদস্য, ফায়ার সার্ভিসের তিনটি টিম আগুন নেভানোর কাজ করছে। তবে মূল কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। বিকেলে ৫টা পর্যন্ত বনের মধ্যে আর দৃশ্যমান কোন আগুন ছিল না। তাই ফায়ার সার্ভিস আজকের মত পানি দেওয়া বন্ধ করেছে। তবে কিছু কিছু জায়গায় গাছের নিচ ও পাতার স্তুপ থেকে ধোয়া বের হতে দেখা যাচ্ছে। বন বিভাগের কর্মীরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে। সকাল নাগাদ যদি আবারও আগুন দেখা যায়, তাহলে ফায়ার সার্ভিস আবারও আগুন নেভানোর জন্য পানি দিবে।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মাদ বেলায়েতে হোসেন বলেন, সোমবারের অগ্নিকান্ডের পরে আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানতে তদন্ত কমিটি ঘটন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেলে আমরা ক্ষয় ক্ষতি ও পুড়ে যাওয়া বনভূমির পরিমান জানাতে পারব। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে আগুন লাগার পেছনে যদি কাউকে দায়ী করা হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করার আশ্বাস দেন তিনি।

সোমবার (০৩ মে) দুপুর ১২টার দিকে শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি এলাকায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিস, বন বিভাগ ও স্থানীয়দের প্রায় ৩০ ঘন্টার চেষ্টায় মঙ্গলবার (০৪ মে) বিকেল ৫টায় আগুন নিভে যায়। পরবর্তীতে বুধবার (০৫ মে) সকালে পূর্বের আগুনের দক্ষিন পাশে আবারও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এই নিয়ে গেল ২০ বছরে সুন্দরবনে ২৬ বার অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটল।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!