সুন্দরবনে জেলেদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা অভায়রণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালামের বিরুদ্ধে। বনরক্ষীদের এগিয়ে দিয়ে ফিরে আসার সময় কটকা এলাকা থেকে ট্রলারের চালক ও একজন শ্রমিককে আটক করে ২০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন ওই কর্মকর্তা এমন অভিযোগ করেছেন ট্রলার মালিক মৎস্য ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান পিন্টু।
বরগুনা এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান পিন্টু বলেন, সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগরে মাছ আহরণের স্বার্থে সুন্দরবন বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে আমাদের সু সম্পর্ক রাখতে হয়। অনেক সময় বনরক্ষীদের বিভিন্ন আবদার আমাদের মেটাতে হয়। রবিবার (২৩ আগষ্ট) পাথরঘাটা পদ্মাস্লুইজ এলাকা থেকে ট্রলারযোগে দুইজন বনরক্ষীকে সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলা ফাড়িতে এবং একজন বনরক্ষীকে শেলা ক্যাম্পে পৌছে দেয় আমার ট্রলারের চালক মোঃ কবির হোসেন আকন। পৌছে দিয়ে বিকেলের দিকে পাথরঘাটা ফেরার পথে কটকা অভয়ারন্য এলাকা দিয়ে আসার পথে ট্রলার চালক মোঃ কবির হোসেন আকনকে অফিসে ডেকে নেয় অভায়রন্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম। পরে সেখানে অনেক কথা বলে কবিরকে আটক করে বনরক্ষীরা। তখন কবির বলে আপনাদের তিনজন বনরক্ষিকে সুন্দরবনের ক্যাম্পে পৌছে দিতে আমি সুন্দরবনে এসেছিলাম। তাদের কাছ থেকে বিষয়টি জানেন। তারপরও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম কোন কথা না বলে ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। কবির বিষয়টি আমাকে অবহিত করলে আমি বনরক্ষীদের দুটি (০১৫৩৫১৯৭১৪৬ ও ০১৫৭৫৪০৩৩৭৪) বিকাশ নাম্বারে ১০ হাজার করে ২০ হাজার টাকা দেই। টাকা পাওয়ার পরেই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম আমার ট্রলার চালককে ছেড়ে দেন। মিজানুর রহমান পিন্টু আরও বলেন, তিনজন বনরক্ষীদের অনুরোধেই আমি ট্রলার পাঠিয়ে ছিলাম সুন্দরবনে। কিন্তু ২০ হাজার টাকা গুনতে হল আমাকে।
এছাড়া আলমগীর হোসেন নামের এক জেলে মুঠোফোনে জানান, তার কাছ থেকেও একই ভাবে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা নেয় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম। এর আগে কটকা অভয়ারন্য এলাকায় ইমাম হোসেন নামের এক কিশোরকে ৪দিন আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত বন কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
পুর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মাদ বেলায়েত হোসেন বলেন, শরনখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মোঃ জয়নাল আবেদীন আমাকে জানিয়েছেন সিআর মামলার মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তারপরও যে অভিযোগ উঠেছে বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন তিনি।
গত ১০ আগষ্ট থেকে ১৪ আগষ্ট পর্যন্ত ইমাম হোসেন (১২) নামের এক শিশুকে আটক রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে এই ওসির বিরুদ্ধে।
খুলনা গেজেট / এমএম