বয়স হয়েছিল। ছিল বাসস্থানে ইয়াসের ধাক্কাও। আর লড়াই চালিয়ে যেতে পারেনি সুন্দরবনের রাজা। হার মানতে হল। রবিবার সকালেই মৃত্যু ঘটল। সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের হরিখালি ক্যাম্পের পাশে। পূর্ণবয়স্ক বাঘটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন বনকর্মীরা। মুখে দেওয়া হয়েছিল ওআরএস মেশানো জল। চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সজনেখালিতে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। পথেই মৃত্যু ঘটে বাঘটির। ময়না তদন্ত করে দেখে নেওয়া হচ্ছে মৃত্যুর আসল কারণ কী। প্রাথমিকভাবে অনুমান, বয়সের জন্যই মৃত্যু হয়েছে বাঘটির।
রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) ভিকে যাদব জানিয়েছেন, বয়সজনিত কারণেই বাঘটির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তাঁর কথায়, চিড়িয়াখানায় সাধারণত একটি বাঘ বেঁচে থাকতে পারে প্রায় ১৮ বছরের কাছাকাছি। কিন্তু সেই বাঘই জঙ্গলে থাকলে ১২ থেকে ১৪ বছর বাঁচে। কারণ, চিড়িয়াখানায় বাঘের যে পরিচর্যা হয় সেটা জঙ্গলে সম্ভব নয়। কারণ, চিড়িয়াখানার বাঘকে খাবারের জন্য কোনও প্রতিযোগিতায় নামতে হয় না। জঙ্গলে যেটা প্রতি পদে পদে ঘটে। রবিবার সকালেই বাঘটি হরিণভাঙা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে হরিখালি ক্যাম্পের পাশে চলে এসেছিল। অসুস্থ অবস্থায় তাকে দেখতে পেয়ে বনকর্মীরা শুশ্রূষা করার চেষ্টা করেন। নৌকা করে চিকিৎসার জন্য তাকে সজনেখালি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করা হয়। কিন্তু পথেই বাঘটি মারা যায়। বাঘটির বয়স ১২ থেকে ১৪ বছরের কাছাকাছি।
কিন্তু ইয়াসে বাঘটির ওপর কী প্রভাব পড়েছিল? বনদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ইয়াসের কারণে জঙ্গলের ভেতর জল ঢুকে গেছিল। ফলে বহু প্রাণী বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ে। যার প্রমাণ ইয়াসের দিন হরিণ ও বুনো শুয়োরের জলে ভেসে লোকালয়ের দিকে চলে আসা। হতে পারে এই বাঘটি যেখানে ছিল সেখানে কোনও খাবার পাচ্ছিলনা। আবার জল থেকে বাঁচতে তাকে অনেক পরিশ্রমও করতে হয়েছে। এটাও হতে পারে জলের তোড়ে বাঘটি কোনও শক্ত জিনিসের সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছিল। বয়স এবং এই সমস্ত ঘটনা তার মৃত্যুর কারণ হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। গোটা জিনিসটাই পরিষ্কার হবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরে।