মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের প্রথমে দিনেই ক্ষমতাচ্যুত অং সান সুচির সরকারের অধিকাংশ সদস্যকে বরখাস্ত করে নতুন লোক নিয়োগ করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টর্স এবং বিবিসি বার্মিজ বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, সুচি সরকারের ২৪ জন মন্ত্রী, উপমন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সাথে নতুন ১১ জন মন্ত্রী নিয়োগ করা হয়েছে । নুতন মন্ত্রীদের অধিকাংশই সিনিয়র সেনা কর্মকর্তা। কয়েকজন রয়েছেন সেনা সমর্থিত দল ইউএসডিপির সদস্য। ইউএসপিডির অন্যতম নেতা উনা মং লউনকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে।
জানা গেছে তিনি নভেম্বরের নির্বাচনে হেরে গিয়েছিলেন। সেনাবাহিনী পরিচালিত টেলিভিশনে নতুন এসব নিয়োগের ঘোষণা দেয়া হয়। এদিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জোট আসিয়ানের কয়েকটি দেশ তাদের সদস্য মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানকে ‘অভ্যন্তরীণ’ ব্যাপার বলে বিবেচনা করছে। জোটের পক্ষ থেকে অথবা সদস্য দেশগুলোর পক্ষ থেকে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের সরাসরি কোনো নিন্দা করা হয়নি।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি দিশের এই জোটের বর্তমান চেয়ারম্যান ব্রুনেই এর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই জোট আশা করে জনগণের ইচ্ছার প্রতি সম্মান রেখে সংলাপের মাধ্যমে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।”
“ আসিয়ান চেয়ারম্যানের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, “আমরা আবারো স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে আসিয়ান জোটের সদস্য দেশগুলোতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এই এলাকার শান্তি এবং সমৃদ্ধির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
তবে আসিয়ানের তিনটি সদস্য দেশ – ক্যাম্বোডিয়া, ফিলিপিন্স এবং থাইল্যান্ড – খোলাখুলি বলেছে, মিয়ানমারে যা হচ্ছে তা তাদের একান্তই অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এ নিয়ে তাদের কিছু বলার নেই।
ক্যাম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন বলেছেন, “অভ্যুত্থান মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।” থাইল্যান্ডের উপ-প্রধানমন্ত্রী এক বিবৃতিতে একই মন্তব্য করেছেন।
ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট দুতার্তের একজন মুখপাত্র এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “মিয়ানমারে যা হচ্ছে তা তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার এবং এনিয়ে আমরা কোনো নাক গলাতে চাইনা, তবে আমরা আশা করি পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে।”
মালয়েশিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তারা আশা করে মিয়ানমারে নির্বাচন নিয়ে যে বিরোধ সংশ্লিষ্ট সমস্ত পক্ষ বসে তা শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করে ফেলবে। তবে নিন্দা না করলেও অপেক্ষাকৃত শক্ত ভাষায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইন্দোনেশিয়া এবং সিঙ্গাপুর।
ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছেন – আইনের শাসন, সুশাসন এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বং সাংবিধানিক সরকার আসিয়ান জোটের চার্টারের মূলমন্ত্র।
সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে “গভীর উদ্বেগ“ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, “সিঙ্গাপুর আশা করে সব পক্ষ যেন ধৈর্য ধারণ করে এবং একসাথে বসে আপোষ মীমাংসার মাধ্যমে বিরোধের শান্তিপূর্ণ একটি সমাধানের চেষ্টা করে।”
খুলনা গেজেট/কেএম