রিজে ১-১ সমতা। হারারেতে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিটি বলতে গেলে অঘোষিত ফাইনাল। এমন এক ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে ১৯৪ রানের বড় লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। টাইগার বোলারদের তেড়েফুড়ে খেলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯৩ রান করেছে স্বাগতিকরা।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী চেহারায় হাজির হয় জিম্বাবুয়ে। দুই ওপেনার তাদিওয়ানাশে মারুমানি আর ওয়েসলে মাদভেরে প্রথম তিন ওভারে তোলেন ২৮ রান।
চতুর্থ ওভারে তাসকিন আহমেদের ওপর চড়াও হন মাদভেরে। টানা পাঁচ বলে পাঁচটি চার হাঁকান তিনি। ওভারের শেষ বলটি কোনোমতে বাঁচাতে সক্ষম হন টাইগার পেসার।
পঞ্চম ওভারে সাকিব আল হাসান এসে সেই রানের স্রোত কিছুটা কমান, দেন ৩ রান। পরের ওভারে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন মারুমানি। তবে তার ফল খুব একটা ভালো হয়নি।
ওভারের শেষ বলে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে জিম্বাবুইয়ান ওপেনারকে (২০ বলে ২৭) বোল্ড করে দেন সাইফউদ্দিন। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের রান দাঁড়ায় ১ উইকেটে ৬৩।
মারকুটে ব্যাটিং থামেনি এরপরও। উইকেটে এসে রীতিমত ভয়ংকর চেহারায় হাজির হন রেগিস চাকাভা। একের পর এক বল সীমানার ওপারে আছড়ে ফেলতে থাকেন উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান।
এর মধ্যে নাসুম আহমেদের করা ১১তম ওভারে টানা তিন বলে তিন ছক্কা হাঁকান চাকাভা। তবে পরের ওভারেই সে ঝড় থামিয়েছেন সৌম্য সরকার। সৌম্য থামিয়েছেন বললে অবশ্য পুরোপুরি ঠিক হবে না।
আসলে তো নাইম শেখ আর শামীম হোসেন পাটোয়ারীর যৌথ প্রচেষ্টার ফসল চাকাভার উইকেটটি। এবারও সজোরে হাঁকিয়েছিলেন চাকাভা, ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচটি নিয়েও ভারসাম্য রাখতে পারেননি নাইম।
তবে দড়ির বাইরে যাওয়ার আগে দারুণ বুদ্ধিমত্তায় বলটি ওপরে তুলে দেন তিনি, পাশেই দাঁড়ানো শামীম কয়েক পা দৌড়ে গিয়ে ক্যাচটি তালুবন্দী করেন। তাতেই চাকাভাকে সাজঘরে ফেরানো গেছে। ২২ বলে ৬ ছক্কায় ৪৮ রান করেন তিনি।
সৌম্য সেই ওভারেই তুলে নিয়েছেন আরও এক উইকেট। জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ক সিকান্দার রাজাকে বোল্ড করেছেন রানের খাতা খোলার আগেই।
এগারতম ওভারে জোড়া উইকেট হারিয়ে রানের গতি কমে যায় জিম্বাবুয়ের। বাংলাদেশি বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পরের ৪ ওভারে তারা তুলতে পারে মাত্র ২৪ রান।
সেই চাপ থেকেই সাকিবের করা ১৬তম ওভারের প্রথম বলটি রিভার্স সুইপ করেছিলেন মাদভেরে। ৩৬ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৫৪ রানের ইনিংস খেলা এই ব্যাটসম্যানের ক্যাচটি থার্ডম্যানে সহজেই তালুবন্দী করেন শরিফুল। ওই ওভারে আসে মাত্র ৩ রান।
পরের ওভারে শরিফুল দেন ৭। কিন্তু ১৮তম ওভারে আবারও রান বিলিয়ে বসেন সাইফউদ্দিন। তিন চার আর এক ছক্কায় তার ওভার থেকে ১৯ রান তুলে নেয় জিম্বাবুয়ে।
১৯তম ওভারে দারুণ বোলিং করেন শরিফুল। প্রথম বলেই শরিফুল ফেরান মায়ার্সকে (২০ বলে ২৩)। পুল করতে গিয়ে বাতাসে বল ভাসিয়ে দেন এই ব্যাটসম্যান। সবমিলিয়ে ওই ওভারে শরিফুলের খরচ মাত্র ২ রান।
শেষ ওভারে সাইফউদ্দিন আবার ১৪ দিয়ে বসেন। টানা দুই বলে চার আর ছক্কা হাঁকান রায়ান বার্ল। তিনি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ১৫ বলে ৩১ রানে।
বল হাতে সবচেয়ে সফল ছিলেন পার্টটাইমার সৌম্য সরকার। ৩ ওভারে ১৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। শরিফুল ইসলাম ৪ ওভারে ২৭ আর সাকিব সমান ওভারে ২৪ রান দিয়ে নেন একটি করে উইকেট। সাইফউদ্দিন এক উইকেট পেলেও দিয়েছেন ৫০ রান।
খুলনা গেজেট/ টি আই