দেশের বিভিন্ন স্থানের ন্যায় ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে উত্তাল খুলনা। বিভাগীয় শহর খুলনার প্রাণকেন্দ্র শিববাড়ী মোড়, পিচকার প্যাসেল মোড়, খালিশপুর, দৌলতপুর ও খানজাহান আলী থানাসহ প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে প্রতিবাদমুখর। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে আইন সংশোধন করে সর্বোচ্চ দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি কার্যকর প্রয়োগের দাবি বিক্ষুব্ধদের। অনুরুপ দাবিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই বিক্ষোভ করছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে দৌলতপুর থেকে ধর্ষণ বিরোধী পথযাত্রা শিববাড়ী মোড় হয়ে খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে শেষ হয়। মুক্তিযুদ্ধের শহীদ স্মৃতি পাঠাগারের আয়োজনে জেষ্ঠ্য সাংবাদিক গৌরাঙ্গ নন্দীর নেতৃত্বে বিভিন্ন সংগঠনের অংশ গ্রহনে বিশাল এ পথযাত্রাটি ছিল খুলনার রাজপথে ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ কর্মসূচি। ‘শিশু ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াও বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ পথযাত্রায় অংশ নেন।
সিনিয়র সাংবাদিক ও লেখক গৌরাঙ্গ নন্দী খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে পথযাত্রা শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের বক্তব্যে বলেন, ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড করার সময় এসেছে। সরকারের উচিত শিশু ও নারী নির্যাতনকারীদের সর্বোচ্ছ কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত করা। ধর্ষকের কোন স্বজন, দল, সমাজ ও দেশ থাকতে পারে না। নারী ও শিশু নিপীড়করা সবচেয়ে ঘৃণ্য প্রাণি।
অন্যদিকে, গতদিনের (বুধবার) ন্যায় আজ বৃহস্পতিবারও (০৮ অক্টোবর) নগরীর শিববাড়ী মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি ছিল প্রতিবাদমুখর। ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে তরুণ-শিক্ষার্থীদের স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়েছে খুলনার রাজপথ। সকল দল-মতের মানুষের সরব স্বতস্ফুর্ত প্রতিবাদ কর্মসূচির এ সমায়েতটিই খুলনার সর্ববৃহৎ। ‘আমার সোনার বাংলায় ধর্ষকের ঠাঁই নাই’ প্রতিবাদ বিষয়কে সামনে রেখে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয় ‘তারুণ্য’ নামের সামাজিক সংগঠন। সংগঠনটির মূখ্য দাবি, “ধর্ষকের আবাদ উপড়ে ফেলো/ ধর্ষণ মুক্ত বাংলাদেশ গড়ো”। এছাড়া বিক্ষুব্ধ তরুণ-শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের হাতে ছিল প্রতিবাদ স্লোগান খচিত প্লাকার্ড। প্রতিটি প্লাকার্ড যেনো একেক একটি প্রতিবাদ মঞ্চ। তীব্র রৌদ্র উপেক্ষা করে প্রতিবাদ অবস্থান কমসূচি ছিল সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও শান্ত। মুহুমুহু স্লোগানে মেতে উঠেছিল গোটা শিববাড়ী মোড়।
অন্যদিকে, নগরীর পিকচার প্যাসেল মোড়ে মানববন্ধন করেছে সার্চ মানবাধিকার সোসাইটি বাংলাদেশসহ একাধিক সংগঠন। মানবাধিকার এ সংগঠনটির প্রতিবাদ্য বিষয় ছিল, “হে পুরুষ নারীর পতি শ্রদ্ধাশীল হও”।
সার্চ মানবাধিকার সোসাইটি বাংলাদেশের খুলনা বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাজু মোল্যা বলেন, আইনের প্রয়োগের মাধ্যমে সমাজকে ধর্ষণ ও ধর্ষক মুক্ত করে নিরাপদ বাসস্থান বিনির্মাণে সকলকেই একসাথে কাজ করতে হবে। সচেতনতা, ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ ও আইনের শাসন এ তিনের সমন্বয়ে সমাজ বিনির্মাণ সম্ভব।
খুলনা গেজেট/এআইএন