সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নে চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু করেছে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে পবিত্র রমজান মাসেও রাজনৈতিক, সাংগঠনিক ও কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে দলটি। এতে সারাদেশের তৃণমূল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষ, পেশাজীবী ও বন্ধু দেশের সমর্থন আদায়েও চলছে কর্মতৎপরতা।
এজন্য ইফতার রাজনীতির পাশাপাশি মাঠের কর্মসূচিতেও রমজানজুড়ে সক্রিয় থাকছে দলটি। বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সরকারের বেপরোয়া দুর্নীতির প্রতিবাদ এবং ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে সারাদেশের জেলা ও মহানগর পর্যায়ে আজ শনিবার দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গণঅবস্থান পালন করবেন নেতাকর্মীরা। এর মধ্য দিয়ে টানা ১০ দিনের কর্মসূচিতে প্রবেশ করতে যাচ্ছে দলটি। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে নেওয়া হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন কৌশল। এজন্য দলটির নেতাকর্মীরা প্রায় প্রতিদিনই বৈঠক, ঘরোয়া প্রস্তুতি সভা ও মতবিনিময় করছেন।
আগামীতে সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের আগে নিজেদের প্রস্তুতি পর্ব সম্পন্ন করতে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলের নেতাকর্মীরা। তাঁরা বলছেন, বিগত বছরগুলোতে পবিত্র রমজান মাসে শুধু ইফতার রাজনীতিতেই সীমাবদ্ধ ছিল তাঁদের কর্মসূচি। কিন্তু এবার ইফতার আয়োজনের ব্যাপ্তি বহুগুণ বেড়েছে। তেমনি মাঠের কর্মসূচিতেও তাঁদের ব্যস্ত রাখা হয়েছে। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের পাশাপাশি রাজনীতি নিয়েই তাঁদের সময় পার করতে হচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে রমজান মাসেও তাঁরা রাজনৈতিক কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে তাঁদের আন্দোলন চলমান রাখতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
জানা গেছে, সারাদেশে নেতাকর্মীকে উজ্জীবিত ও আরও সক্রিয় করতে এবার ব্যতিক্রমী ইফতার আয়োজন করা হয়েছে। বিএনপির পাশাপাশি ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দলসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের ব্যানারে বিভাগীয় পর্যায়ে আয়োজিত এ কর্মসূচি সফল করতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এসব ইফতার মাহফিলকে রাজনৈতিক মতবিনিময় সভায় পরিণত করে বিভিন্ন খাতে সরকারের দুর্নীতি, অনিয়ম, লুটপাট, বিদেশে টাকা পাচারসহ অন্যান্য প্রসঙ্গ তুলে ধরার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিশেষ করে রমজান মাসেও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দুর্ভোগের শিকার খেটে খাওয়া মানুষের কষ্টের কথাও থাকবে। সমাজের দরিদ্র আর সরকারি দলের নেতাকর্মীর তুলনামূলক চিত্রও তুলে ধরা হবে এসব সভাগুলোতে। এতে দলের নেতাকর্মী ছাড়াও পেশাজীবীসহ সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত রয়েছে দলের হাইকমান্ডের।
অন্যদিকে এ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দলের নেতাকর্মীর মধ্যে কোন্দল নিরসনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তার পরও যেসব জায়গায় কোন্দল নিরসন সম্ভব হবে না, সেসব কমিটি ভেঙে দেওয়ার কঠোর বার্তাও রয়েছে কেন্দ্রের।
খুলনার কর্মসূচি দলীয় কার্যালয়ের সামনে
১০ দফা দাবিতে আজ ১ এপ্রিল শনিবার বেলা ২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসুচি পালন করবে খুলনা মহানগর বিএনপি। কেডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপি দলীয় কার্যালয় সামনে এ কর্মসুচি পালিত হবে। অবস্থান কর্মনুচিতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এড. নিতাই রায় চৌধুরি।
খুলনা গেজেট/এইচ