কুমিল্লা নগরীর ধর্মসাগর পার্কে বসে থাকা তরুণ-তরুণীর ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ায় জেলা গোয়ান্দা পুলিশের দুই সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) রাতে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বরখাস্তকৃতরা হলেন- জেলা গোয়ান্দা পুলিশের কনস্টেবল নজরুল ইসলাম ও রোমান হাবিব রবিন।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহম্মেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি। মৌখিকভাবে কয়েকজন বিষয়টি জানান। তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১৪ এপ্রিল রাতেই তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যায়, নববর্ষের দিন কুমিল্লার নগর উদ্যানে এক কোণো জড়ো হয়ে বসে ছিলেন তরুণ-তরুণী। এ সময় পেছন থেকে ভিডিও করতে করতে তাদের সামনে গিয়ে পরিচয় জানতে চান গোয়েন্দা পুলিশের একজন সদস্য। তাদের দাঁড় করিয়ে একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকেন তিনি।
এ সময় তরুণীর মাস্ক খোলার জন্য বলতে গিয়ে তাকে ‘তুই’ বলে সম্বোধন করেন পাশে থাকা আরেক পুলিশ সদস্য। এরপরই পরিচয় জানতে যাওয়া পুলিশ সদস্য ওই তরুণকে বলেন, ‘মুড়ায়া ছাতনা ছিরালামু একবারে।’
গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা এ সময় মেয়েটির বাবার ফোন নম্বর চাইলে তারা ভয়ে মাফ চাইতে থাকেন এবং মেয়েটির বাবা বিদেশ থাকেন বলে জানান ছেলেটি। তখন পাশ থেকে একজন বলতে থাকেন, ‘বিদেশ থেকে আইব এখন, নইলে অফিসে নিয়া যামু। অফিস থেকে অভিভাবক আইসা নিয়া যাবে।’ এক মিনিট ১০ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে ছেলেটিকে কয়েকবার মাফ চাইতে দেখা যায়। তবে কর্ণপাত করেননি পুলিশ সদস্যরা।
ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সতেচন নাগরিক সমাজ তীব্র প্রতিবাদ জানায়।
এ বিষয়ে সচেতন নাগরিক কমিটির কুমিল্লার সাবেক সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ যে কোনো কিছুর ভিডিও ধারণ করতে পারে। তবে তরুণ-তরুণীদের চেহারাসহ ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া খুব অন্যায়। পুলিশ সদস্য হিসেবে এমন কাজ আমরা আশা করি না। তারা যদি আত্মঘাতি কোনো সিদ্ধান্ত নিত, সেক্ষেত্রে এর দায়ভার কে নিত?
খুলনা গেজেট/ টি আই