ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এখন বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন পদচ্যুত মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। সুনির্দিষ্ট নানা অভিযোগে এরই মধ্যে সারা দেশে ৭৪১টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামির তালিকায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ বিদায়ী মন্ত্রিপরিষদের প্রায় সব সদস্যই রয়েছেন। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন মামলায় আসামি হয়েছেন সংসদে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলীয় জোটের সাবেক সংসদ সদস্যরা (এমপি)।
তবে চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মাসুদ উদ্দীন চৌধুরী ছাড়া এখনো আসামি তালিকার বাইরে আছেন জাতীয় পার্টির অন্য এমপিরা। বিভিন্ন মামলায় সাবেক মন্ত্রী-এমপি, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং শীর্ষস্থানীয় পেশাজীবীদের নাম উল্লেখ ছাড়াও বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীকে ‘অজ্ঞাত’ আসামি করা হয়েছে। ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলি চালিয়ে হত্যা কিংবা গণহত্যার অভিযোগ ছাড়াও অনেকের নামে হত্যাচেষ্টা, অর্থ পাচার, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত তিনটি সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ দলীয় এমপিদের বিরুদ্ধে কমপক্ষে ৭৪১টি মামলা হয়েছে। এর মধ্য রাজধানীতেই মামলা হয়েছে ২২৭টির অধিক। বাকি ৫১৪টি মামলা হয়েছে অন্য জেলাগুলোয়। এসব মামলার মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রায় দুইশটিতে আসামি করা হয়েছে।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সারা দেশে মামলা জোয়ারের মধ্যেও কয়েকটি জেলা এখনো এর বাইরে রয়েছে। গাইবান্ধা, বাগেরহাট, রাঙামাটি, বান্দরবান, চুয়াডাঙ্গা ও কুড়িগ্রামে কোনো মামলার তথ্য পাওয়া যায়নি। আবার কোনো কোনো প্রবীণ মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে নিজ এলাকায় মামলা না হলেও রাজধানীতে তাদের আসামি করা হয়েছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শতাধিক মামলা হলেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে তাদের নিজ এলাকায় কোনো মামলা হয়নি।
মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণী পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রতিটি মামলায় আসামির তালিকা প্রায় একই ধরনের। শুরুতে কিছু নাম উল্লেখ করে পরে কয়েক হাজার অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। এলাকাভেদে কিছুটা পরিবর্তন করে এসব মামলা করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আসামি করার পেছনে মামলার বাদী কিংবা পরামর্শদাতাদের ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে বাদী নিজেই জানেন না অথচ থানায় মামলা হয়ে গেছে। আবার বাদীর পরিচিত নন কিংবা তিনি চেনেন না, এমন ব্যক্তিদেরও আসামি করা হয়েছে। এমনকি হয়রানি করার জন্য বাদীকে হুমকি দিয়ে কিংবা আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে মামলায় নাম ঢোকানোর অভিযোগও পাওয়া গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, চট্টগ্রাম জেলা এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০টি মামলা হয়েছে। সাবেক এমপির মধ্যে খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, মাহফুজুর রহমান মিতা, এস এম আল মামুন সরকার ছাড়া বাকিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে অন্তত ১০টি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়েশা খানের বিরুদ্ধে ঢাকা ও চট্টগ্রামে একাধিক মামলা রয়েছে।
লক্ষ্মীপুরে আনোয়ার হোসেন খান এবং আবদুল্যা আল মামুনের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। কুমিল্লায় আবদুল মজিদ, জাহাঙ্গীর আলম ও আবু জাফর মোহাম্মদ শফি উদ্দিনের নামে কোনো মামলা হয়নি। সাবেক এলজিআরডিমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ নিজ নিজ এলাকায় একাধিক মামলা হয়েছে।
কক্সবাজারে সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদিসহ সাবেক তিন এমপির বিরুদ্ধে মামলা হলেও জাফর আলমের বিরুদ্ধে নেই কোনো মামলা।
নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নামে কোনো মামলা না থাকলেও অন্য এমপিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে। তিনি কয়েকটি মামলায় এখন কারাগারে। তবে গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মুক্তাদির চৌধুরীর বিরুদ্ধে রয়েছে তিন মামলা ও সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এবি তাজুল ইসলাম কারাগারে। তবে কোনো মামলা নেই ফয়জুর রহমান বাদলের বিরুদ্ধে।
ফেনীতে সবচেয়ে বেশি আটটি মামলা হয়েছে নিজাম উদ্দিন হাজারীর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের বিরুদ্ধে একটি ও মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলা হয়েছে।
চাঁদপুরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হলেও কোনো মামলা নেই মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, শফিকুর রহমান ও রফিকুল ইসলাম বীরউত্তমের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, বরিশাল বিভাগে ১৫টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করা ঝালকাঠি-১ আসনের আলোচিত সংসদ সদস্য শাহজাহান ওমরের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছেন ঝালকাঠি-২ আসনের ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু। এলাকায় মামলা না হলেও ঢাকার এক মামলায় পটুয়াখালী-২ আসনের এমপি সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ কারাগারে। পটুয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান মহিবের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা হয়েছে। বরিশাল-৪-এর পঙ্কজ দেবনাথের বিরুদ্ধে মারধরের মামলা, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ভোলা-৩-এর নুরনবী চৌধুরী শাওনের বিরুদ্ধে এলাকায় মামলা না হলেও ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। তবে বরগুনা-২ আসনের সুলতানা নাদিরা জলি, বরিশাল-১-এর আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, পিরোজপুর-২ আসনের মহিউদ্দিন মহারাজ, পিরোজপুর-৩ আসনের শামীম শাহনেওয়াজ, ভোলা-১ আসনের এমপি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, ভোলা-৪-এর আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।
অন্যদিকে, সিলেট বিভাগে ৫৬টি মামলা হয়েছে। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন হত্যা, নাশকতাসহ কমপক্ষে ৭টি মামলার আসামি। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে হত্যা ও নাশকতার অন্তত ২০টি মামলার হয়েছে। সাবেক প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সাবেক পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, মৌলভীবাজার-২-এর শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, মৌলভীবাজার-৩-এর জিল্লুর রহমানে বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সাবেক এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সুনামগঞ্জ-৫-এর মুহিবুর রহমান মানিক, সুনামগঞ্জ-১-এর রনজিত সরকার মামলার আসামি। হবিগঞ্জ-১-এর আব্দুল মজিদ খান ও ময়েজউদ্দিন রুয়েল ৮ হত্যা মামলার আসামি। হবিগঞ্জ-৩-এর আবু জাহির, পর্যটনমন্ত্রী মাহবুব আলী, হবিগঞ্জ-৪-এর সায়েদুল হক সুমনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
তবে এই বিভাগের সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ, সুনামগঞ্জ-২-এর জয়া সেনগুপ্তা, সুনামগঞ্জ-৪-এর মোহাম্মদ সাদিক ও হবিগঞ্জ-২-এর কেয়া চৌধুরীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি।
রংপুর বিভাগে ১২টি মামলা দায়ের হয়েছে। নারী এমপি নাছিমা জামান ববি, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, রংপুর-১-এর আসাদুজ্জামান বাবলু, রংপুর-২-এর আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, রংপুর-৫-এর জাকির হোসেন, রংপুর-৬-এর জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর নামেও মামলা হয়েছে।
দিনাজপুর-১ আসনের মনোরঞ্জনশীল গোপাল, সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিম, দিনাজপুর-৬-এর শিবলী সাদিক মামলার আসামি হলেও মামলা হয়নি সাবেক অর্থমন্ত্রী এইচ এম মাহমুদ আলী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের বিরুদ্ধে।
নীলফামারী-১-এর আফতাব উদ্দিন সরকার, সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা হলেও আসামির তালিকায় নেই নীলফামারী-৩-এর সাদ্দাম হোসেন পাভেলের নাম।
সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, লালমনিরহাট-১-এর মোতাহার হোসেন, লালমনিরহাট-৩-এর মতিয়ার রহমান এমনকি সংরক্ষিত নারী আসনের সফুরা বেগম রুমীর নামেও হত্যাসহ একাধিক মামলা হয়েছে।
সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেনের নামে হত্যা ও ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক এমপি মাজহারুল ইসলাম সুজনের নামে চাঁদাবাজি মামলা হয়েছে।
সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের বিরুদ্ধে নিজ এলাকায় কোনো মামলা না হলেও তিনি ঢাকায় একটি মামলায় গ্রেপ্তার হন। পঞ্চগড়-১ এর নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া মুক্তার নামে কোনো মামলা হয়নি।
রাজশাহীতে ২৪টি মামলার আসামি মন্ত্রী ও এমপিদের মধ্যে রয়েছেন রাজশাহী-১ আসনের ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী-২ শফিকুর রহমান বাদশা, রাজশাহী-৩ আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজশাহী-৪ আবুল কালাম কালাম আজাদ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল ওয়াদুদ দারা এবং সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
সিরাজগঞ্জ-২ আসনের জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী, হাবিবে মিল্লাত মুন্না, সিরাজগঞ্জ-৩ আব্দুল আজিজ এবং সিরাজগঞ্জ-৫ এর আব্দুল মমিন মণ্ডলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। তবে সিরাজগঞ্জ-৪-এর তানভীর ইমাম, শফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ-১ এর তানভীর শাকিল জয় ও সিরাজগঞ্জ-৬-এর চয়ন ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি।
নাটোর-১-এর আবুল কালাম আজাদ ও নাটোর-৪-এর সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী কোনো মামলার আসামি না হলেও মামলার বোঝা চেপেছে নাটোর-২-এর শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাটোর-৩-এর জুনাইদ আহমেদ পলকের ঘাড়ে। জয়পুরহাট-১ আসনের সামছুল আলম দুদু ও জয়পুরহাট-২-এর এমপি ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের বিরুদ্ধে সাতটি মামলা দায়ের হয়েছে।
বগুড়ায় সবচেয়ে বেশি বগুড়া-৬ আসনের রাগেবুল আহসান রিপুর বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা হয়েছে। বগুড়া-৫-এর এমপি মজিবুর রহমান মজনুর বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া সাহাদারা মান্নান চারটি, শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ চারটি, খান মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ আল মেহেদী বাঁধন দুটি, রেজাউল করিম তানসেন তিনটি ও মোস্তফা আলম নান্নু তিনটি মামলার আসামি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিন আসনের মধ্য মু. জিয়াউর রহমান ও আব্দুল ওদুদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নওগাঁর তিন আসনের মধ্য খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহিদুজ্জামান সরকার, নিজাম উদ্দিন জলিল ও ছলিম উদ্দীন তরফদার সেলিম একই মামলার আসামি। তবে ব্রুহানী সুলতান মাহমুদ গামা ও ওমর ফারুক সুমনের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি।
পাবনার ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক এমপি গালিবুর রহমান শরীফ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, ফিরোজ কবীর ও মকবুল হোসেনের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে।
ময়মনসিংহের সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সাবেক এমপি মাহমুদুল হক সায়েম, মোহিত উর রহমান শান্ত, নজরুল ইসলাম, আব্দুল মালেক সরকার, মোহাম্মেদ আব্দুল ওয়াহেদ ও এবিএম আনিছুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা হলেও সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম, এমপি নিলুফার আনজুম পপি, মাহমুদ হাসান সুমন ও ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলের নামে কোনো মামলা নেই।
শেরপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন ছানুর বিরুদ্ধে ছয়টি ও এডিএম শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি মামলা হয়েছে। তবে শেরপুর-২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরীর বিরুদ্ধে জেলায় কোনো মামলা নেই। তবে তার বিরুদ্ধে ঢাকায় একাধিক মামলা রয়েছে।
জামালপুরে সাবেক মন্ত্রী মুরাদ হাসানের নামে দুই মামলা ছাড়া কারও বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। তবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের নামে ঢাকায় একাধিক মামলা হয়েছে।
নেত্রকোনায় মোস্তাক আহমেদ রুহী, সাবেক মন্ত্রী আরিফ খান জয়, অসীম কুমার উকিল, আহমদ হোসেন, সাবেক সংরক্ষিত এমপি অপু উকিলের নামে মামলা হলেও এখন পর্যন্ত আসামি তালিকার বাইরে আছেন সাবেক মন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, ইফতিকার উদ্দিন পিন্টু ও সাজ্জাদুল হাসান।
খুলনায় সাবেক এমপি নোনী গোপাল মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলা না হলেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ সালাউদ্দিন জুয়েলের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। একই অবস্থা বাকি এমপিদেরও।
যশোরে তৌহিদুজজামান, কাজী নাবিল আহমেদ, এনামুল হক বাবুল ছাড়া অন্য সব এমপির বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে।
নড়াইলে জাতীয় সংসদের হুইপ মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাসহ সব এমপির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মেহেরপুরে সদ্য সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনসহ দুজনের বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দিন ও শেখ তন্ময়ের বিরুদ্ধে বাগেরহাটে কোনো মামলা হয়নি। তবে তাদের বিরুদ্ধে ঢাকায় মামলা হয়েছে। বাগেরহাটের বাকি দুই এমপি হাবিবুন নাহার ও এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি।
সাতক্ষীরায় জাতীয় পার্টির এমপি ছাড়া বাকি সব এমপির বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে। ঝিনাইদহে নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল ও সালা উদ্দিন মিয়াজী ছাড়া বাকি এমপিরা মামলায় পড়েছেন।
কুষ্টিয়ায় সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফের বিরুদ্ধে। তবে মামলা হয়নি রেজাউল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে। নরসিংদীতে পাঁচজনের মধ্যে সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ও সাবেক মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। মানিকগঞ্জের জাহিদ আহমেদ টুলুর বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। ফরিদপুরে এ.কে আজাদ ছাড়া বাকি এমপিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
মাদারীপুরে সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা হলেও সাবেক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী মোহাম্মদ ফারুক খানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। গাজীপুরে সব এমপির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কিশোরগঞ্জে জাতীয় পার্টির এমপি ছাড়া সবার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। টাঙ্গাইলে লতিফ সিদ্দিকী ছাড়া সব সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে।