সাতক্ষীরায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী মনিরুল ইসলামের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার (২৩ জুলাই) সাতক্ষীরা অতিরিক্ত দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক মোঃ মাসুম বিল্লাহ এক জনাকীর্ণ আদালতে এই রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী মনিরুল ইসলাম (৩৫) সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ভদ্রখালী গ্রামের গোলাম হোসেনের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, আসামী মনিরুল ইসলামের সাথে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালী গ্রামের মৃত শওকত আলী সরদারে কন্যা সাবিকুন্নাহার ওরফে সাবিনার ২০০৮ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের ঘরে রিয়াদ (২) ও মারিয়া ইয়াসমিন সাইমা (৭) নামের দুটি সন্তানের জন্ম হয়। এরপরও পারিবারিক কলহের জের ধরে আসামী মনিরুল প্রায়ই তার স্ত্রীকে নির্যাতন করতো।
একপর্যায়ে ২০১৩ সালের ১৫ জুলাই ভোর রাত সাড়ে ৪ টার দিকে সেহেরী খাওয়ার সময় আসামী মনিরুল সাতক্ষীরা শহরের কামাননগরের জনৈক করিমুন্নেছার ভাড়া বাড়ির চতুর্থ তলায় পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে তার স্ত্রী সাবিনার মাথা, শরীর ও মুখের বিভিন্ন স্থানে কাঠের মুগর দিয়ে বেধড়ক পিটায়। এতে সে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। তার ডাকচিৎকারে বাড়ির মালিকসহ অন্যান্য ভাড়াটিয়ারা দরজা খুলতে বললেও ঘাতক মনিরুল দরজা না খুলে ভিতরে অবস্থান করে।
এরপর অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ হয়ে মারা যায় তার স্ত্রী সাবিনা। কোন উপায় না পেয়ে স্থানীয়রা ঘরের বাইরের দিক থেকে দরজা লাগিয়ে পুলিশে খবর দেন। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাবিনার মরদেহ উদ্ধারসহ ঘাতক মনিরুলকে গ্রেপ্তার করেন।
এ ঘটনায় ওই দিনই নিহত সাবিনার মা আঞ্জুয়ারা খাতুন বাদী হয়ে ঘাতক জামাতা মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তারকৃত মনিরুল ১৬৪ ধারায় মাজিস্ট্রের সামনে নিজের দোষ স্বীকার জবানবন্দীও প্রদান করেন।
এ মামলায় ৮ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক মোঃ মাসুম বিল্লাহ আসামী মনিরুল ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে, আরো ১ বছরের কারাদন্ড প্রদান করেন।
এ মামলায় আসামী পক্ষে আইনজীবি ছিলেন, অ্যাড. আব্দুল মজিদ। অপরদিকে, রাস্ট্র পক্ষে আইনজীবি ছিলেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. আব্দুল বারী।
খুলনা গেজেট/রুহুল কুদ্দুস/এমএম