সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালিন বিরোধীদলীয় নেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ী বহরে হামলা মামলায় জামিনে থাকা তিন আসামীর সময়ের আবেদন না’মঞ্জুর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। একইসাথে আসামীদের ৩৪২ ধারায় মতামত গ্রহণ শেষে ১৪ জন সাফাই সাক্ষী দেয়ার আবেদন করলে মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ হুমায়ুন কবীর ১১জনের আবেদন মঞ্জুর করে বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) সাক্ষীর দিন ধার্য করেছেন। মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) মামলার ধায্যদিনে তিনি এই অদেশ দেন।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা আসামীরা হলেন সাবেক যুবদল নেতা আব্দুল কাদের বাচ্চু, মফিজুল ইসলাম ও মোঃ আলাউদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন অতিরিক্ত এটর্ণি জেনারেল এসএম মুনীর, ডেপুটি এটর্ণি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জী, সহকারি এটর্ণি জেনারেল শাহীন মৃধা ও সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ, সাবেক পিপি অ্যাড. তপন কুমার দাস, সাবেক পিপি অ্যাড. ওসমান গনি, অ্যাড. ইউনুস আলী, অতিরিক্ত পিপি অ্যাড.ফাহিমুল হক কিসলু, সাবেক অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. আজাহার হোসেন অ্যাড. অ্যাড. শহীদুল ইসলাম পিন্টু, অ্যাড. ওকালত আলী প্রমুখ। আসামীপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন বাংলাদেশ হাইকোর্টের অ্যাড.শাহানারা আক্তার বকুল, অ্যাড. আব্দুল মজিদ (২), অ্যাড. মিজানুর রহমান পিন্টু, অ্যাড কামরুজ্জামান ভুট্টো প্রমুখ।
মামলার কার্যক্রম শুরুতেই রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত এটর্ণি জেনারেল এসএম মুনীর, ডেপুটি এটর্ণি জেনারেল সুজিত কুমার চ্যাটার্জী বলেন, তিনজন আসামী অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে তাদের আইনজীবী সময়ের আবেদন করেছেন। আবেদনে ওইসব আসামী কোথায় চিকিৎসাধীন, কি রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। তাই তাদের সময়ের আবেদন না’মঞ্জুর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন।
এ ছাড়া আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. আব্দুল মজিদ(২) সাক্ষী শহীদুল ইসলাম, আনছার আলী ও জোবায়দুল হক রাসেলকে জেরা করার জন্য আবেদন জানান। রাষ্ট্রপক্ষ আইনি ব্যাখ্যার মাধ্যমে তাতে আপত্তি জানালে আসামীপক্ষের আবেদন না’মঞ্জুর করা হয়। একপর্যায়ে ৩৪২ ধারা মোতাবেক কাঠগোড়ায় উপস্থিত ৩৪ জন আসামী নিজেদের নির্দোষ দাবি করলে তাদের সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিব, অ্যাড. আব্দুস সাত্তার ও অ্যাড. আব্দুস সামাদসহ কয়েকজনের পক্ষ থেকে ১৪ জন সাফাই সাক্ষীর তালিকা আদালতে পেশ করা হয়।
আদালত তিন জনকে বাদ দিয়ে বাকী ১১জন সাক্ষীর শুনানীর জন্য বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) দিন ধার্য করেন। আসামী পক্ষ সাফাই সাক্ষী দেয়ার আবেদন জানানোয় আইনগত কারণে মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা যায়নি।
অতিরিক্ত এটর্ণি জেনারেল এসএম মুনীর সাংবাদিকদের বলেন, জামিনে থাকা তিনজন আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তিনজন সাক্ষীকে জেরা করার আসামী পক্ষের আবেদন না’মঞ্জুর করেছে আদালত। একইসাথে ১১জনের সাফাই সাক্ষীর জন্য বুধবার দিন ধার্য করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই সাফাই সাক্ষী শেষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হতে পারে বলে জানান তিনি।
আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. আব্দুল মজিদ বলেন, তিনজন সাক্ষীকে জেরা করার জন্য তারা আবেদন করলেও আদালত তা না’মঞ্জুর করে। এছাড়া জামিনে থেকে নিয়মিত হাজিরা দিলেও মঙ্গলবার অসুস্থতার কারণে তিনজন আসামীর জামিন না’মঞ্জুর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জারির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একইসাথে ১৪ জন সাফাই সাক্ষীর মধ্যে ১১জনের আবেদন মঞ্জুর করে বুধবার শুনানীর জন্য দিন ধার্য করেছে আদালত।
খুলনা গেজেট/এ হোসেন