সাতক্ষীরার জলাবদ্ধতা নিরসনে শহরের প্রাণসায়ের খাল খনন ও সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করতে ফের শুরু হয়েছে খালের দু’ধারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান। দীর্ঘ কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর শনিবার থেকে প্রাণসায়ের খালের দুই তীরে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়। রবিবার দ্বিতীয় দিনের মত শহরের সুলতানপুর বড়বাজার সংলগ্ন এলাকায় এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়।
সাতক্ষীরা শহরের বুক চিরে প্রবাহিত প্রাণসায়র খাল আজ অবৈধ স্থাপনার কারণে বিলীন হতে চলেছে। শহরের জলাবদ্ধতার জন্য এসব অবৈধ স্থাপনাকে দায়ী করা হয়। জলাবদ্ধতা থেকে শহরবাসিকে মুক্তি এবং প্রাণসায়র খাল রক্ষায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে।
শহরের বড়বাজার ব্রিজ এবং একই সময় সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অফিসের সীমানা প্রাচীরের পিছনে স্বপন কুমার শীলের বাড়ির পাশ থেকে পৃথক দু’টি বুলডোজার দিয়ে অবৈধ স্থাপনা অপসারণের কাজ শুরু করা হয়। উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইদ্রজিৎ কুমার সাহা ও পাউবো’র প্রকৌশলী রাশেদ রেজা বাপ্পি।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইন্দ্রজিৎকুমার সাহা বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসের পিছন থেকে শহরের নারিকেলতলা মোড় পর্যন্ত প্রাণসায়ের খালের দু’ধারে রয়েছে জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পৌরসভার জায়গা। ইতিপূর্বে প্রাণসায়ের খাল খননের লক্ষ্য কয়েকবার খালের দু’ধার উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এ নিয়ে প্রতিবন্ধকতা আছে কিনা একথা বলা যাবে না। তাই শুধুমাত্র জেলা প্রশাসনের জায়গা জবর দখলকারিদের চিহ্নিত করে শনিবার থেকে দু’টি বুলডোজার দিয়ে অবৈধ স্থাপনা ভাঙ্গার কাজ শুরু করা হয়েছে। মাছ ব্যবসায়ি বাবু খানের ঘর গ্যাস সংযোগের জটিলতা থাকায় তারা সময় চাওয়ায় ওই পর্যন্ত অভিযান বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে অন্য স্থানে উচ্ছেদ অভিযান অব্যহত থাকবে।’
অভিযান পরিচালনাকালে প্রাণসায়র খালের জমি দখল করে গড়ে ওঠা বেশ কয়েকটি স্থাপনা অপসারণ করা হয়। এসময় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদস্থ কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেছেন, ‘সাতক্ষীরা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রাণসায়ের খাল খনন ও খালের দুই পাশের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করতে তালিকাভূক্ত সকল স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।’ উচ্ছেদ অভিযানে সহযোগিতা কারার জন্য জেলা প্রশাসক জেলাবাসিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পরিকল্পিত, দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক সাতক্ষীরা শহর গড়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শেষ হওয়ার সাথে সাথে সাতক্ষীরা প্রাণ সায়ের খালের দু’ধারে দৃষ্টিনন্দন কাজ শুরু হবে। ইতোমধ্যে কাজের অনেকাংশ শেষ হয়েছে।’
তিনি আরো জানান, প্রাণসায়ের খাল সম্পুর্ণ অবৈধ দখলমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, এর আগে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে চলতি বছরের শুরুতে ‘গ্রিন সাতক্ষীরা-ক্লিন সাতক্ষীরা’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শুরু হয় প্রাণসায়ের খালের দু’পাশে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারনে কিছুদিন পর এই অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর আবারও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম