সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির দুই গ্রুপের মধ্যকার বিবাদমান দ্বদ্বের জের শেষ পর্যন্ত নাশকতার মামলা পর্যন্ত গড়ালো। আর এই মামলার আসামি হয়েছেন দুই আওয়ামীলীগ নেতা শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলার অন্যতম স্বাক্ষী এড: আজহারুল ইসলাম ও জেলা আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক এড. ওসমান গনিসহ ৯জন আইনজীবী। শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন সাতক্ষীরা জজকোর্টের জিপি এড. শম্ভু নাথ সিংহ। যার সদর থানার মামলা নং-৫৪।
যদিও উক্ত মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যে এবং পরিকল্পিত বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী আইনজীবীরা। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এ মামলা দেওয়া হয়েছে বলে ভুক্তভোগী এড. সাহেদুজ্জামানসহ অন্যান্য আইনজীবীরা দাবি করেছেন।
থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, তিনি সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির আহবায়ক এবং সরকারি কৌশুলী (জিপি)। সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ২২ সেপ্টেম্বর দুপুরে সাধারণ সভা আহ্বান করে চিঠি বিতরণ করছিলেন তিনিসহ আহবায়ক কমিটির সদস্য এড. মোজাহার হোসেন কান্টু, এড. নিজাম উদ্দীন, এড. সৈয়দ এখলেছার আলী বাচ্চু এবং এড. শাহনেওয়াজ পারভীন মিলি। এ সময়ে এড. শাহ আলমের নির্দেশে এড. আমিনুর রহমান চঞ্চল, এড.সাহেদুজ্জামান সাহেদ, এড. সাঈদুর রহমান সাঈদ, এড. সাঈদুজ্জামান জিকো, এড. আরিফুর রহমান আলো, এড. ওসমান গনি, এড. আজহারুল ইসলাম, এড. আব্দুল খালেক ও এড. রাশেদুজ্জামান সুমন সমিতির ভবনের নিচ তলায় বোর্ডে থাকা আইনজীবীদের নাম মুছে দেন এবং অফিসে ভাংচুর করেন। এছাড়া অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মহড়া প্রদর্শন করেন।
এঘটনায় এড. শম্ভু নাথ সিংহ নিজে বাদি হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৫(৩)/২৫ডিএসসহ ১৪৩/১৪৮/৪৯/১২৭/৫০৬(২)/১৪/১০৯ পেনাল কোডের ধারা দেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে এড.শাহ আলম জানান, সাতক্ষীরা-১ ও সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্যদ্বয়সহ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের অনুমতি ব্যতিত এজেন্ডা বহির্ভূতভাবে এড. শম্ভু নাথ সিংহ (জিপি) আহবায়ক কমিটির ৩ জনকে বাদ দিয়ে সেখানে একজনকে অর্ন্তভুক্ত করে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্য্যনির্বাহী কমিটির বোর্ডে ৫জনের নাম তালিকাভুক্ত করেন। যার প্রতিবাদে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ আইনজীবীগণ ফুসে উঠেন এবং ওই বোর্ড থেকে নাম মুছে ফেলেন। এঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মিথ্যে নাশকতার মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কোন ব্যক্তি বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতায় আইনে মামলা করতে পারে না। কিন্তু এড. শম্ভু নাথ সিংহ কিভাবে বাদী হলেন, সেটি জানা নেই। এছাড়া বিশেষ ক্ষমতায় আইনের মামলা হয় সরকারি, আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি সাধন করলে। অথচ উকিল বার একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। তিনি অবিলম্বে ওই মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এদিকে, আইনজীবী পেশায় নিয়োজিত দুই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা হওয়ায় দলীয় নেতাকর্মীদেও মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে। ইতিমধ্যে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দাও জানিয়েছেন।
এবিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল কায়ুম বলেছেন, মামলাটিকে নাশকতার মামলা বলা যাবে না। এটিকে আন্ত:ঘাতমূলক মামলা বলা হয়।