সাতক্ষীরায় বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শহরে এসে সরকারি ও সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি হচ্ছে। তবে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা জানা গেলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তিকৃত রোগীর অনেকের তথ্য গোপন থেকে যাচ্ছে। এছাড়া অনেকেই ডেঙ্গু পরীক্ষা না করেই শুধুমাত্র জ্বরের চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের ডেঙ্গু রোগীর প্রতিবেদন পর্যালোচনায় জানা যায়, জেলায় ১ জানুয়ারী থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর গড় সংখ্যা ছিল শুণ্য দশমিক ৭১ জন। আগষ্ট মাসে প্রতিদিন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাড়ায় ৭ দশমিক ৫ জন। তবে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ১৭ দিনে সেই সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে গড় ১২ দশমিক ৪৭ জন।
এদিকে গত, ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরায় নতুন করে আরো ২৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এনিয়ে এ মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দুইশ’ অতিক্রম করেছে। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৫৫ জন। জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা ৫৮৬ জন। এদের মধ্যে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে ৪৮৩ জন। উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্রে রেফার্ড করা হয়েছে ৪২ জনকে। তবে এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা রোববার(১৭ সেপ্টেম্বর) ৭ জনের কথা উল্লেখ করা হলেও সোমবার একজন কমিয়ে বলা হয়েছে ৬ জন।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিস থেকে প্রেরিত ডেঙ্গু রোগীর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১ জানুয়ারী থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৭ মাসে জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ১৪৯ জন। এসময়ে কেউ মারা যায়নি। আগস্ট মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২২৫ জন। এ মাসে মৃত্যু হয় ৪ জনের। সেপ্টেম্বর মাসের ১৭ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২১২ জন। এদের মধ্যে মারা গেছেন ২ জন।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. জয়ন্ত সরকার বলেন, প্রতিদিন বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতাল থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি সম্পর্কে যে তথ্য প্রেরণ করা হয় তার ভিত্তিতে জেলার নিয়মিত প্রতিবেদন তৈরী করা হয়। কিন্তু অধিকাংশ বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে কোন তথ্য পাঠানো হয় না। এছাড়া অনেকেই জ্বরের চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। চিকিৎস্যক ডেঙ্গুর পরীক্ষা দিলেও রোগীরা তা করছেন না। ফলে মোট আক্রান্ত সংক্রান্ত প্রকৃত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) তালা হাসপাতালে একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়। কিন্তু এ ব্যাপারে সেখান থেকে কোন লিখিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।
এর আগে সাতক্ষীরার একটি বেসরকারী হাসপাতালে একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার খবর পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। কিন্তু হাসপাতাল কতৃপক্ষ বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে তাদের সাথে বারবার যোগাযোগ করার একপর্যায়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে। এসব কারনে ডেঙ্গু পরিস্থিতির প্রকৃত চিত্র না পাওয়ার কথা তিনি স্বীকার করেন তিনি।
খুলনা গেজেট/ টিএ